ফিচার

পরিযায়ী পাখি শিকার বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

Advertisement

শীত এলেই দেশে পরিযায়ী পাখি শিকারের রীতিমত উৎসব শুরু হয়। দেশের যেখানেই পরিযায়ী পাখিরা নিজেদের নিরাপদ মনে করে; সেখানেই একদল শিকারি হানা দেয়। পরিযায়ী পাখি হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হয়। একদল বিত্তবান আগেই শিকারীদের বলে রাখেন, যেন পরিযায়ী পাখি ধরে তাদের বাসায় পাঠানো হয়। ফলে পাখি বিক্রিতে শিকারীদের বেগ পেতে হয় না।

দেশে প্রচলিত আইনে পরিযায়ী পাখি ধরা ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষেধ। তারপরও অবাধে পরিযায়ী পাখি হত্যা চলছে। গণমাধ্যমে দেখা যায়, কোথায়, কে বা কারা, কখন, কীভাবে পরিযায়ী পাখি শিকার করছেন। এগুলো কোথায় বিক্রি হয়। এ সংক্রান্ত সংবাদ ছাপা হয়। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: পরিযায়ী পাখির সমাগমে মুখর ‘চাতল বিল’

Advertisement

তারপরও স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না। প্রশ্ন হলো এ ব্যর্থতার কারণ কী? স্থানীয় প্রশাসন হয়তো পরিযায়ী পাখির বিষয়টি গুরুত্ব দেয় না। আবার গুরুত্ব দিলেও জনবলের অভাবে কাজ করা সম্ভব হয় না। পরিযায়ী পাখির শিকারী ধরা পড়লে তার বিরুদ্বে আইনগত ব্যবস্থা সবল নয়। সামান্য সাজা দেওয়া হয়। এ জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিযায়ী পাখি ধরা হয়। জায়গাগুলো দুর্গম। খবর পেয়ে পুলিশ যেতে যেতে শিকারীরা পালিয়ে যায়। এ জন্য যেসব জায়গায় পরিযায়ী পাখি ধরা হয়; সেসব জায়গার সচেতন নাগরিকদেরই ব্যবস্থা নিতে হবে। তারাই গড়ে তুলতে পারেন পাখির শিকার বন্ধে কঠোর আন্দোলন।

আরও পড়ুন: শীতকালে পোষা পাখির যত্নে করণীয়

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারে। কমিটি করে কাজ করতে পারে। নিতে পারে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা। শুধু পুলিশের পক্ষে শিকার ঠেকানো সম্ভব নয়। পরিযায়ী পাখির নিরাপত্তায় সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করলে সফলতা আসবে কমই।

Advertisement

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সাধারণ সম্পাদক করে স্থানীয় সাংবাদিক, সমাজকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী, প্রধান শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী এবং ইমামদের নিয়ে কমিটি গঠন করে কাজ করা সম্ভব। স্থানীয় জনগণ তাদের এলাকা পাখি শিকারমুক্ত করেছেন, এমন ঘটনা অনেক আছে। তাই সবাই মিলে কাজ করলে পরিযায়ী পাখিসহ সব ধরনের পাখি শিকার বন্ধ করা সম্ভব।

লেখক: পরিবেশ-প্রকৃতি বিষয়ক লেখক।

এসইউ/জেআইএম