ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের মাইজখার গ্রামের সিরাজুল ইসলামের তৃতীয় ছেলে সামিউল ইসলাম সাইমন (২২)। পরিবারের হাল ধরতে পাড়ি জমিয়েছিলেন কাতারে। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাগজের জটিলতায় হয়ে যান অবৈধ অভিবাসী। আর দেশে ফেরা হয়নি। অবশেষে সেখানেই একটি দুর্ঘটনায় নিহত হয়ে ৪ বছর পর দেশে ফিরলেন সামিউল। তবে নিথর দেহে।
Advertisement
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে বাদ আসর জানাজার নামাজ শেষে সামিউলের মরদেহ দাফন করা হয়।
সামিউলের বড় ভাই আব্দুর রফিক ও তার বন্ধু মাজেদুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, সামিউল ইসলাম বাবা মায়ের ৪ ছেলে ও ৬ বোনের মধ্যে তৃতীয়। বড় এই পরিবারে আয়-উপার্জনের তেমন কেউ নেই। সামিউল দেশে থাকাকালীন ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতেন। ৪ বছর আগে পরিবারের হাল ধরতে পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর কাগজপত্রের জটিলতায় হয়ে যান অবৈধ অভিবাসী। এই অবস্থায় দেশে ফিরলে আর কাতারে যেতে পারতেন না। তাই গত ৪ বছরে সামিউল দেশে একবারের জন্যও আসতে পারেননি। সেখানে অবৈধ হওয়ায় তার নির্দিষ্ট কোনো কাজ ছিল না। যখন যা কাজ পেতেন তাই করতেন।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ভোরে কাতারের আল শামাল রোডে একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেকটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে সামিউল ইসলাম সাইমনসহ ৪ বাংলাদেশি নিহত হন। নিহত হওয়ার ৬ দিন পর আজ বুধবার সামিউলের মরদেহ দেশে ফিরে আসে।
Advertisement
৪ বছর পর সন্তানের দেখা পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সামিউলের বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য। এ সময় এক হৃদয়বিদায়ক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাদ আসর সামিউলের নিজ গ্রামের মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়৷ জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে সামিউলের মরদেহ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এফএ/এএসএম