জাতীয়

কিশোরগঞ্জের হাওরে এবার ১৫ কিমি উড়াল সড়ক, ব্যয় ৫৬৫১ কোটি

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলা সদর থেকে মিঠামইন সেনানিবাস সংযুক্ত করে করিমগঞ্জ উপজেলা পর্যন্ত হাওরের ওপর দিয়ে ১৫ দশমিক ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে। এ খাতে মোট ব্যয় হবে পাঁচ হাজার ৬৫১ কোটি ১৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ‘কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলা সদর থেকে করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালী পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় এ কাজ বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এ প্রকল্পসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রায় ১০ হাজার ৬৪০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১১টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন সাত হাজার ৮২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা আর বৈদেশিক অর্থায়ন দুই হাজার ৮৮০ কোটি ১৮ টাকা।

আরও পড়ুন: হাওরের বুক চিরে আর সড়ক নয়

প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

Advertisement

প্রকল্প এলাকা: কিশোরগঞ্জ জেলার কিশোরগঞ্জ সদর, করিমগঞ্জ, নিকলি ও মিঠামইন উপজেলা।

আরও পড়ুন: ব্যয় কমানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উড়াল সড়ক প্রকল্পটির প্রধান উদ্দেশ্য মিঠামইন সদর থেকে মিঠামইন সেনানিবাসকে সংযুক্ত করে করিমগঞ্জ পর্যন্ত হাওরের ওপর দিয়ে ১৫ দশমিক ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক নির্মাণ। নাকভাঙ্গা মোড় থেকে মরিচখালী বাজার পর্যন্ত ১৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের মাধ্যমে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাসহ এর আশেপাশের হাওর এলাকার সঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা সদর এবং ঢাকা, সিলেট ও অন্যান্য জেলার সাথে সরাসরি ও নিরবচ্ছিন্ন সব আবহাওয়ায় চলাচলের জন্য উপযোগী সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা।

আরও পড়ুন: কর্ণফুলী টানেলের ব্যয় বাড়লো ৩১৫ কোটি টাকা

Advertisement

প্রধান কার্যক্রম: ১৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ, ১৫ দশমিক ৩১ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ, এক হাজার ২৩০ মিটার সেতু নির্মাণ (৪৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি, ৩৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি এবং ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি), ১৩টি টোল প্লাজা (টোল বুথ, ওজন স্টেশন ও টোল যন্ত্রপাতিসহ), টোল মনিটরিং ভবন, চেক পোস্ট ইত্যাদি। এছাড়া ১৩ কিলোমিটার অস্থায়ী সাব-মারসিবল সড়ক নির্মাণ, চারটি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন (শোধনাগারসহ), চারটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, ৪০ হাজার ৪৬৮ বর্গমিটার কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড, আট হাজার ২২৪ বর্গমিটার বাস স্টপ নির্মাণ, ১৫১ দশমিক ০৯ একর ভূমি অধিগ্রহণ কাজ করা হবে।

একনেক সভা জানানো হয়, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতির যুগে একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী ও দক্ষ পরিবহন সেবা প্রধানতম নির্ধারক হিসেবে কাজ করে। একটি দেশে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃবাণিজ্য এবং বিনিয়োগপ্রবাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে এ প্রতিযোগী সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে আঞ্চলিক উন্নয়নের ধরন ও দারিদ্র্যের স্থানীয়করণের ক্ষেত্রেও দক্ষ পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাপক প্রভাব রাখে।

আরও পড়ুন: ইভিএম প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছুই জানতে চাননি

এতে আরও বলা হয়, হাওর এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ডেল্টাপ্ল্যানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হাওর এলাকায় আকস্মিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনায় অ্যাটগ্রেড সড়কের পরিবর্তে উড়াল সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের মতামত: প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাসহ এর আশেপাশের হাওর এলাকার সঙ্গে জেলা সদর এবং ঢাকা, সিলেট ও অন্যান্য জেলার সঙ্গে সরাসরি ও নিরবচ্ছিন্ন সব আবহাওয়া চলাচল উপযোগী সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হবে।

এমওএস/এমকেআর/এমএস