মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
Advertisement
শীতকালে পোষাপ্রাণীর জন্য বাড়তি যত্ন জরুরি। যাতে শীতে ওরা কাবু না হয়। সাধারণত শীতকালে পোষা পাখি বেশি অসুস্থ হয়। খাঁচা কিংবা কলোনি যেভাবেই পাখি পালন করুন। আগে খেয়াল করুন, সারসরি ঠান্ডা বাতাস পাখির গায়ে লাগে কি না। সরাসরি বাতাস লাগার সুযোগ একদম বন্ধ করুন। অল্প বাতাসেও ওদের ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তাপমাত্রা কত তা মিটারে দেখুন। ডিজিটাল, ম্যানুয়াল তাপমাত্রা মাপার মিটার, যেটাই হোক একটি পাখির রুমে রাখুন।
সাধারণত পাখি যদি সুস্থ-সবল হয়। সারাবছর উন্নত মানের খাবার খেয়ে থাকে। পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকে। তাহলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হবে। তাপমাত্রার হেরফেরে সহসা কিছু হওয়ার কথা নয়। বিশেষ করে লাভবাডর্স, ম্যাকাও, সান কুনুরসহ বড় পাখিদের। ফিঞ্চের মতো ছোট পাখিরা আমাদের দেশে তাপমাত্রা জনিত কারণে বেশি অসুস্থ হয়। পাখির রুমের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রুম হিটার ব্যবহার করতে পারেন। আবার হিট বাল্বও ব্যবহার করা যায়। তবে ১০০ বা ২০০ পাওয়ারের লাইট না জ্বালানোই ভালো। এ লাইট পাখির মল্টিংয়ের কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী পাখির সমাগমে মুখর ‘চাতল বিল’
Advertisement
অনেকে পুরো খাঁচা মোটা কাপড়, চট দিয়ে ঢেকে দেন। এটি করবেন না। আলো, বাতাসের আসা যাওয়ার অভাবে পাখি অসুস্থ হতে পারে। কারণ পাখির মল, মূত্রে এক রকম গ্যাস তৈরি হয়। সিড মিক্সের গুজিতিল, ক্যানারি, মিলেটের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারেন। ড্রাই এগ ফুড থাকুক সব সময়। এ খাবারগুলো পাখির শরীরকে গরম রাখে। পাখির খাঁচা, কলোনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। প্রতিদিন পরিষ্কার পানি দিন। সফট ফুড দিলেও তা খাঁচায় পড়ে যেন না থাকে। খাচায় সফট ফুড পড়ে থাকলে তা পচে জীবাণুর সৃষ্টি করতে পারে। অপেল সিডার ভিনেগার (অপরিশোধিত) ৫ এমএল এক লিটার পানিতে মিশিয়ে পাখিকে দেওয়া যেতে পারে। এতে পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
পাখির প্রতি নজর রাখতে হবে। ঝিমায় কি না। স্বাভাবিক তৎপরতা লোপ পেয়েছে কি না। মল ঠিক আছে কি না। ঠিকমত খায় কি না। এসবের কোনোটা স্বাভাবিক মনে না হলে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো পাখি অসুস্থ মনে হলে সাথে আলাদা খাঁচায় নিতে হবে। যেটাকে বলে হসপিটাল কেস। ৪০ ওয়াটের লাইট জ্বালিয়ে দিতে হবে। তারপর লক্ষণ বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাখির দোকান, অনলাইনে পাখির চিকিৎসকদের সন্ধান পাওয়া যায়। তাদের দেখিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া ভালো।
আরও পড়ুন: ফাহমিদার শখের পাখিতে সফলতা
পোষা পাখির মধ্যে ওয়াক্সবিল ফিঞ্চসহ অনেক প্রজাতি আছে, যারা রোগ লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে। মানুষ দেখলে স্বাভাবিক তৎপরতা দেখায়। বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। পোষা পাখি বনের পাখির মতো শক্তপোক্ত নয়। এ জন্য সব সময় এদের সঠিক পরিচর্যা করতে হয়। প্রয়োজনীয় খাবার দেওয়া চাই। বনের পাখির মতো এরা প্রয়োজনমতো খাদ্য উপাদন সংগ্রহ করতে পারে না। যতটুকু তাকে দেওয়া হবে ততটুকু ছাড়া। এ বিষয়গুলো মনে রাখা চাই।
Advertisement
লেখক: পোষা পাখি পালক।
এসইউ/জিকেএস