সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় বংশী নদীর ওপর নির্মাণাধীন নলাম সেতুর কাজ। নির্ধারিত মেয়াদে কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় সময় বাড়ানো হয়েছে। তারপরেও কাজ শেষ হবে কী না তা নিয়ে জনমনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
Advertisement
যদিও এলজিইডির প্রকৌশল বিভাগ বলছে, চলতি জুনের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করতে না পারলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন সেতুটির নলাম প্রান্তে পিলার তৈরির সঙ্গে আরও কিছু কাজ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা পিলারের লোহার অংশে জং পড়ে গেছে। আর নদীর মাঝখানে এবং ও শেষ প্রান্তে শুধু পিলার উঠেছে। সেখানে আর অন্য কোনো কাজ হয়নি। সেতু সংলগ্ন ঘাট দিয়ে নদী পারাপার করছে একটি নৌকা। এই নৌকার ওপরই ভরসা করে থাকতে হয় মাইঝাল, পাইছাল, উনাইন, ধামসোনা ও গোপালবাড়িসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষকে।
সাভার উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১ জুলাই এই সেতুর কাজের উদ্বোধন করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৮২০ ফুট এবং প্রস্থ ২৪ ফুট। বাজেট ধরা হয় ২১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। পুরো কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। তবে সাড়ে তিন বছরে কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ দশমিক ৭ শতাংশ। নতুন করে আবার ছয় মাসের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
Advertisement
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আশুলিয়ার ধামসোনা ও শিমুলিয়া ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রামের মানুষের স্বপ্ন এই বংশী নদীর ওপর নলাম সেতু। সেতু না থানায় বেশ ভোগান্তিতে দিন পার করছে এলাকাবাসী। খেয়া পারাপারই তাদের একমাত্র ভরসা। যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় প্রায়ই ঘটছে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। কেউ অসুস্থ হলে ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
কথা হয় বংশী নদীর খেয়ায় মাঝি লাবু মিয়ার সঙ্গে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ব্রিজের কাজ এখন হয় না। কদিন হয়, তারপর আর খবর থাকে না। মানুষরে কত কষ্ট দিতাছে। খালি কয় হয়ে যাইবো। আমরা কাজের কোনো অগ্রগতি দেখতাছি না।’
ধামসোনা ইউনিয়নের সদস্য শফি উদ্দিনের কণ্ঠেও ছিল ক্ষোভ। তিনি বলেন, এই সেতুর জন্য অপেক্ষা দীর্ঘদিনের। প্রায় চার বছর গেলেও ঠিকাদার কাজ শেষ করতে পারলো না। আগামী ছয় মাসে পারবে কী না তাও সন্দেহ। যত দিন যাচ্ছে মানুষের ক্ষোভের মাত্রা ততই বাড়ছে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদার সাইদুল্লাহ ভুঁইয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
Advertisement
তবে এলজিইডির ঢাকা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী জি এম মুজিবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, নতুন করে ঠিকাদারকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ না হলে তার বিরুদ্ধে আইনিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাহফুজুর রহমান নিপু/এমআরআর/এমএস