রাজনীতি

২৫ জানুয়ারি সারাদেশে মহানগর ও জেলায় বিএনপির সমাবেশ

যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামী ২৫ জানুয়ারি দেশের সব মহানগর ও জেলায় সমাবেশ করবে দলটি।

Advertisement

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি থেকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

১০ দফা দাবি আদায় ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার কোনো নিয়ম-কানুন ও বিদ্যুৎ কমিশনকে তোয়াক্কা না করে দাম বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে, বিএনপি সরকারের সময় বিদ্যুতের ইউনিট ছিল ২ টাকা ৬০ পয়সা, আর এখন ১১ টাকা দিতে হয় এক ইউনিটে।

Advertisement

আরও পড়ুন>> পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চট্টগ্রাম, আটক বেশ কয়েকজন

তিনি বলেন, সরকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, ক্যাপাসিটি চার্জ নামে জনগণের পকেট কাটছে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছে, গত ১০ বছরে দেশ থেকে ১০ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমেরিকা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্রে আজ সরকারের লোকের পাচার করা টাকায় বাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। আজ রিজার্ভ সংকট, ব্যাংকে তারল্য সংকট। আজকে বাংলাদেশে ধনী-গরিবের ব্যবধান পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, যা গত ১২ বছরে সরকারের কারণে হয়েছে। আজকে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণি গরিব হয়ে গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার ২০১৮ সালের নির্বাচনের পুলিশের এসপি, ডিসিকে ঘুস দিয়ে নির্বাচন পার হয়েছে, আর এখন প্রশাসনের বিভিন্ন লোকজনকে ঘুস দিয়ে টিকে আছে, তাদের একজন ওয়াসা এমডি, তার নাকি বিদেশে ১৪টি বাড়ি আছে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আমাদের গুম খুনের ভয় দেখিয়ে লাভ নাই, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, আবার লড়াই করেই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকে বাংলাদেশের বিশালসংখ্যক মানুষ দিনে দুই বেলা খেতে পারছে না, অথচ এই সরকার বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ট্যাক্সের মাধ্যমে জনগণের পকেট কাটছে, এই চুরির টাকা যাচ্ছে ভোট চোরদের পকেটে।

আরও পড়ুন>> নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ শুরু

তিনি বলেন, ১০ লাখ কোটি টাকা সরকারের চোরেরা বিদেশে পাচার করেছে, তাদের চুরি এবং পাচারের জন্য দেশের মানুষকে বিদ্যুতের উচ্চমূল্য দিতে হচ্ছে।

আমীর খসরু বলেন, ইদানিং আওয়ামী লীগের নেতাদের পাচার করা টাকায় কেনা বিদেশে বাড়ির সন্ধান মিলছে, এক নেতার বিদেশে ১০টি বাড়ি পাওয়া গেছে, আরেক নেতার ৭০টি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক দল, তারা দেশে গণতন্ত্র চায় না। আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে জবাই করে দিয়েছে, এরশাদের সামরিক শাসনকে সমর্থন জানিয়ে, ১/১১’র অবৈধ সরকারকে সমর্থন দিয়ে নিজেদের ফসল বলে ঘোষণা দিয়েছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের সামনে একটি পথ খোলা আছে, সেটি হলো আন্দোলন। আর সেই আন্দোলন আমাদেরই করতে হবে, কেউ আমাদের আন্দোলন করে দিয়ে যাবে না, আন্দোলন করে এ সরকারকে নামাতে হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চলনায় সমাবেশে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগাঠনি সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন>> নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা, সতর্ক পুলিশ

এদিন সকাল থেকেই নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী কর্মসূচিতে যোগ দেন। নেতাকর্মীদের জন্য ফকিরাপুল মোড় থেকে কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত রাস্তার একপাশের পুরোটায় প্লাস্টিকের চাটাই বিছানো হয়।

নেতাকর্মীদের হাতে বিদ্যুতের দাম কমানো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন দাবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন দেখা যায়।

বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাকরাইল মোড়সহ আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থান নেন। পুলিশের বেশ কয়েকটি জলকামানও দেখা যায়।

খন্দকার মোশাররফের নেতৃত্বে বিকেল সোয়া ৪টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।

কেএইচ/ইএ/এএসএম