বিশ্বব্যাপী বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্তের সংখ্যা। বয়স্কদের পাশাপাশি এখন কমবয়সীদের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বাড়ছে। এ কারণে অকালে ঝরে যাচ্ছে অনেক প্রাণ।
Advertisement
হঠাৎ করেই হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ঘটতে পারে, এ কারণে এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো জানা উচিত সবারই। এমনকি হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে বাঁচাতে তাৎক্ষণিক কী করণীয় তাও জানা জরুরি। এতে নিজের জীবনের পাশাপাশি অন্যের জীবনও বাঁচাতে পারবেন।
আরও পড়ুন: গোসলের কোন ভুলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক জানালো গবেষণা
হৃৎপিণ্ডে রক্তের অভাবের কারণে হঠাৎ করেই হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের স্টেমি প্রোগ্রামের একজন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ও ডিরেক্টর ডা. গ্রান্ট রিযের মতে, সাধারণ বুকে ব্যথা, অস্বস্তি বা চাপের উপসর্গ ছাড়াও হার্ট অ্যাটাক নারী-পুরুষ কিংবা ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। এর মধ্যে বদহজম বা বমি বমি ভাব, চরম ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট ও অসুস্থ বোধের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
Advertisement
দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আনা হলে হার্ট অ্যাটাকের রোগী দ্রুত সুস্থ হতে পারেন। এজন্য হার্ট অ্যাটাক হলে নিজেকে ও অন্যকে দ্রুত কীভাবে সাহায্য করবেন তা জেনে রাখুন।
আরও পড়ুন: জিম করতে গিয়ে হার্ট অ্যাটাক এড়াতে যে নিয়ম মানা জরুরি
অ্যাম্বুলেন্সে কল করুন
উপরের উপসর্গগুলোর মধ্যে কোনোটি অনুভব করলে বুঝতে হবে সেটি হার্ট অ্যাটাক। তবুও আপনার অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স কল করা উচিত। ডা. গ্রান্ট রিড জানান, অনেক রোগী তাদের উপসর্গগুলো উপেক্ষা করেন। ফলে হাসপাতালে যেতে যেতেই তাদের হার্টের পেশি মারা যায়।
Advertisement
আপনি যত দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছাবেন তত তাড়াতাড়ি ডাক্তাররা অবরুদ্ধ করোনারি ধমনী খুলে দিতে পারেন। এতে আপনার মৃত্যুঝুঁকি কমবে ও সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন দ্রুত।
অ্যাসপিরিন খাওয়াতে হবে
উইসকনসিনের ইও ক্লেয়ারের মায়ো ক্লিনিক হেলথ সিস্টেমের কার্ডিওলজিস্ট ড. জোয়েল বিচি বলেন, ‘হার্ট অ্যাটাকে হতেই অ্যাম্বুলেন্সে কল করার পর ৩২৫ মিলিগ্রামের অ্যাসপিরিন ডোজ নিন।
আরও পড়ুন: হঠাৎ করেই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে যাদের
হার্ট অ্যাটাকের সময় ধমনীতে রক্ত প্রবাহকে ব্লক করে দেয়। অ্যাসপিরিন গ্রহণ করা ধমনীর রক্তের জমাট বাঁধার কিছু অংশ ভেঙে দিতে সাহায্য করতে পারে। চিকিৎসকরা অ্যাসপিরিন গিলে ফেলার পরিবর্তে চিবানোর পরামর্শ দেন, যাতে এটি দ্রুত শরীরে প্রবেশ করে।
হাসপাতালে একা যাবেন না
যদি মনে করেন আপনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, তাহলে নিজেই হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। এর পরিবর্তে অবিলম্বে একটি অ্যাম্বুলেন্স কল করুন।
আপনি চেতনা হারাতে পারেন, তাই এই ঝুঁকি নেবেন না। যদি পরিবারের কাউকে পাশে পান তাহলে তাকে বলুন আপনাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া ব্যবস্থা করতে।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ও ফেইলিওরের মধ্যে পার্থক্য
রোগী অজ্ঞান হলে সিপিআর দিন
হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির যদি শ্বাস-প্রশ্বাস না থাকে বা আপনি নাড়ি খুঁজে না পান, তাহলে রক্ত প্রবাহিত রাখতে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) শুরু করুন। তার আগে অবশ্যই অ্যাম্বুলেন্সে কল করুন।
হ্যান্ডস-অনলি সিপিআরের জন্য আপনাকে ব্যক্তির বুকের মাঝখানে দ্রুত ছন্দে জোরে জোরে দ্রুত ধাক্কা দিতে হবে, যতক্ষণ না প্যারামেডিকরা আসেন ততক্ষণ পর্যন্ত। প্রতি মিনিটে প্রায় ১০০-২০০ কম্প্রেশন দিতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জিকেএস