দেশজুড়ে

সরিষায় স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা

ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার ফলে দিন দিন বাড়ছে সরিষার তেলের চাহিদা। একই সঙ্গে দাম ভালো পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। এছাড়া স্বল্প সময়ে চাষযোগ্য, উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় সাথী ফসল হিসেবে জমিতে সরিষা উৎপাদনে ঝুঁকেছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।

Advertisement

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার বোচারবাগ, নারসিংগল, বাড়ৈইপাড়া, ভোলাব, দাউদপুর, হাটাব, মিঠাব, কান্দাপাড়া, হোরগাঁও, বালিয়াপাড়া, পশ্চিম গাও, মাঝিপাড়া, মাঝিনা, পাচাইখাসহ বিভিন্ন এলাকায় হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ। যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। ফুলে ফুলে এই সমারোহ দু-চোখ জুড়িয়ে দেয়। এ যেন সৌন্দর্যের লীলাভূমি। প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সৌন্দর্যের নান্দনিক রূপে।

আরও পড়ুন: জামালপুরে বেড়েছে সরিষা চাষ, আহরণ হচ্ছে মধুও

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এ বছর বিভিন্ন এলাকায় উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ২৫০ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে সরিষা চাষ হয়েছে। যার মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫০মেট্রিকটন। এখানে বারি সরিষা- ১৪, ১৫, ১৭, ১৮বিনা-৯ বিনা-১০সহ উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষার আবাদ করছে কৃষকরা। হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ দশমিক ৪ মেট্রিকটন। চাহিদা বৃদ্ধি ও দাম ভালো পাওয়ার আশায় কৃষকরা সরিষার চাষে ঝুঁকছেন। তাই বেড়েছে আবাদি জমির সংখ্যা। অধিক ফলনশীল জাতের সরিষা চাষাবাদ করেছেন এখানকার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উচ্চ ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। গতবছর সরিষার ভালো দাম পাওয়ায় এবার অনেক কৃষক সরিষা চাষ করেছেন। ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষা তেলের চাহিদা আগের থেকে অনেকাংশই বেড়েছে। একই সঙ্গে চাহিদা বেড়েছে সরিষার।

Advertisement

আরও পড়ুন: লাভ বেশি হওয়ায় ফেনীতে বেড়েছে সরিষা চাষ

উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের হাউলিপাড়া গ্রামের কৃষক লিয়াকত হোসেন বলেন, ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সরিষার চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা থাকায় উৎপাদন খরচ উঠিয়ে একটু লাভের মুখ দেখছি। তাই বেশি পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করেছি।

বালিয়াপাড়া এলাকার সরিষা চাষি সাহাবউদ্দিন বলেন, এবার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বারি-১৪ ও বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে চার হাজার ২০০ থেকে চার হাজার ৫০০ টাকা। আশা করছি ফলন ভালো হবে।

সরিষা চাষি সামছুল মিয়া বলেন, দুই বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা করেছি। এ জাতের সরিষা গাছ একটু লম্বা প্রকৃতির হওয়ায় এর পাতা মাটিতে ঝরে তা পচে জৈবসারের ঘাটতি পূরণ করে। একই সঙ্গে এ জাতের সরিষা আবাদের পর একই জমিতে পরবর্তী ফসলের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি এ উন্নত জাতের সরিষার চাষ করেছি।

Advertisement

আরও পড়ুন: সবুজ মাঠে হলুদ হাসি

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেহা নুর জাগো নিউজকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সরিষা আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন জাতের সরিষার ওপর ৩০টি প্রদর্শনী ও ৫০০ জন কৃষককে সরিষা চাষে সরকারি প্রণোদনা হিসেবে বীজ দেওয়া হয়েছে। সরিষার আবাদ বাড়াতে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

জেএস/জেআইএম