অর্থনীতি

কয়েদিদের তৈরি পণ্য নজর কাড়ছে বাণিজ্যমেলায়

দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা সমাগম বাড়ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায়। মেলায় এবছর ৩৩১টি স্টলে শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের পণ্য। এর মধ্যে ক্রেতাদের নজর কাড়ছে কয়েদিদের তৈরি পণ্য। বাংলাদেশ জেলের স্টলে শোভা পাচ্ছে এসব বাহারি পণ্য। এই স্টলে প্রতিদিন ভিড় করছেন অসংখ্যা ক্রেতা-দর্শনার্থী।

Advertisement

এই স্টলের প্রবেশমুখে লেখা ‘কারাপণ্য, বাংলাদেশ জেল’। স্টলটিতে দর্শনার্থীদের ভিড়ের পেছনে লেখাটিরও হয়তো ভূমিকা রয়েছে। এই লেখা দেখেই অনেকে কৌতূহল নিয়ে বাংলাদেশ জেলের স্টলে প্রবেশ করছেন। কয়েদিদের তৈরি নকশিকাঁথা, জামদানি শাড়িসহ নানা পণ্য ঘুরে ঘুরে দেখছেন তারা। অনেকে আবার কিনছেন পছন্দের পণ্যটি।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার কারা পণ্য স্টলটিতে সরেজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র চোখে পড়ে।

আরও পড়ুন>> বিশাল আয়োজনে বাণিজ্যমেলায় প্রাণ

Advertisement

জানা গেছে, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ ও ২, মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, নারায়ণগঞ্জ কারাগার, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার, ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ৩৮টি কারাগারের বন্দিদের হাতের তৈরি পণ্য এই স্টলে বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্যের মধ্যে একতারা ১০০-২২০ টাকা, ফুড কাভার ১৮০-৪৫০ টাকা, গামছা ১০০-২০০ টাকা, লুঙ্গি ২৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, নকশিকাঁথা ১ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার টাকা, জামদানি শাড়ি ৪ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা, বাঁশ ও প্লাস্টিকের মোড়া ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, সিংহাসন চেয়ার ২ হাজার ১০০ থেকে ৪ হাজার টাকা, বেতের মোড়া ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই স্টলে দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করছে কয়েদিদের তৈরি নকশিকাঁথা।

এই স্টলে কথা হয় জাহানারা আক্তারের সঙ্গে। তিনি জামদানি শাড়ি কিনতে আসেন এখানে। জাহানারা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘জামদানি শাড়ি পরতে আমি খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। অধিকাংশ সময় সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে জামদানি শাড়ি বেশি কেনা হয়। আজ মেলায় এসে কারাপণ্য স্টলে চোখ আটকে যায়। কয়েদিরাও এতে সুন্দর শাড়ি তৈরি করতে পারেন তা আমার জানা ছিল না।’

আরও পড়ুন>> বাণিজ্যমেলায় হাইটেকের ফার্নিচারে ১৫ শতাংশ ছাড়

কয়েদিদের তৈরি বিভিন্ন পণ্য দেখতে আসা ফেরদৌস আহমেদ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ‘কয়েদিরা জেলখানায় থাকা অবস্থায় নানা পণ্য তৈরি করেন তা শুনেছি। কিন্তু আজ মেলায় এসে প্রথম নিজ চোখে দেখলাম। তাদের তৈরি প্রতিটি পণ্যই আমার কাছে খুব সুন্দর লেগেছে।’

Advertisement

কারা স্টলের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি জেলার মো. জাকির হাসান রিয়াল জাগো নিউজকে বলেন, ‘সবসময় মেলায় আমরা ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাই। গতবার বাণিজ্যমেলায় বেচাকেনার দিক দিয়ে তৃতীয় হয়েছিলাম। এবার আশা করছি আমাদের অবস্থান আরও উপরের দিকে থাকবে।’

আরও পড়ুন>> বাণিজ্যমেলায় ১৩০ টাকায় মিলছে ক্রোকারিজ পণ্য

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক কারাপণ্যের লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ কারাবন্দিদের প্রদান করা হবে।’

রাশেদুল ইসলাম রাজু/ইএ/জেআইএম