জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে ‘কোণঠাসা’ হয়ে পড়েছে আওয়ামীপন্থিদের একাংশ। একইসঙ্গে উপাচার্যপন্থি প্যানেলের বিপরীতে একতাবদ্ধ হতে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের দুটি অংশ।
Advertisement
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম প্রশাসনে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের ঘনিষ্ঠ শিক্ষকদের পদায়ন করছেন। সম্প্রতি, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, প্রশাসনিক পদ ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠনে বিষয়গুলো দৃশ্যমান হয়। একইসঙ্গে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামপন্থি শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব ও দলীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা করেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অনিরুদ্ধ কাহালি বলেন, ‘মোট ৭৩টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একটি গ্রুপ ১৫ পদের জন্য ১৫টি মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপিপন্থিরা জমা দিয়েছেন ৫৮টি মনোনয়ন।’
আরও পড়ুন: জাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২৫ জানুয়ারি
Advertisement
১১ জানুয়ারি প্রকাশিত বৈধ প্রার্থীর তালিকায় দেখা যায়, সভাপতি পদে পাঁচজন, সহ-সভাপতি পদে ছয়জন, সম্পাদক পদে ৯জন, যুগ্ম সম্পাদক পদে ছয়জন, কোষাধ্যক্ষ পদে আটজন এবং নির্বাহী সদস্য পদে ১০ জনের বিপরীতে ৩৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষক একাধিক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নির্বাচনের তফসিলে উল্লেখ করা হয়, ১৬ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং সেদিনই চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ হবে। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৫ জানুয়ারি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, এবার দীর্ঘদিন পরে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থিদের একটি মাত্র প্যানেল দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি আওয়ামীপন্থিদের মধ্যে সব বিভক্তি দূর করে এক থাকার।
আরও পড়ুন: জাবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ৩১ জানুয়ারি
Advertisement
তবে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একাংশ অভিযোগের সুরে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষকদের মনোনয়নপত্র জমাদান অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। এতে মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে আমাদের একটি অংশকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই এ প্যানেলকে আমরা আওয়ামীপন্থি না বলে উপাচার্যপন্থি হিসেবে ধরে নিয়েছি।’
এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের’ ব্যানারে আওয়ামীপন্থিদের চূড়ান্ত প্যানেলে সভাপতি পদে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে আইআইটির অধ্যাপক এম শামীম কায়সার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অন্যদিকে নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দ এক হওয়ার চেষ্টা করছেন। ফোরাম দুটির নেতৃত্বে আছেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান এবং অপর অংশটিতে আছেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. শামছুল আলম।
এ বিষয়ে অধ্যাপক শামছুল আলম বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আদর্শিক দ্বন্দ্ব নেই। সামান্য ভুল বোঝাবুঝি ছিল যেটি সারাদেশের ঐক্যপ্রচেষ্টাকে সামনে রেখে দূর হয়েছে। শিগগির ১৫ পদে ১৫ জনকে রেখে বাদবাকি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।’
এসজে/জেআইএম