কম খরচে বেশি লাভের আশায় জামালপুরে বেড়েই চলেছে ভুট্টা চাষ। যমুনা ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে ব্যাপকহারে ভুট্টার চাষ হয়েছে। শুধু চরাঞ্চল নয়, পুরো জেলায়ই এবার ভুট্টার চাষ বেড়েছে।
Advertisement
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ১৭,৪৬৩ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৪,৪৬৩ হেক্টর বেশি। বছরজুড়ে ভুট্টার চাষ করা যায়। এর মধ্যে রবি (অক্টোবর-মার্চ), খরিফ-১ (মধ্য মার্চ-মধ্য জুন) এবং খরিফ-২ (মধ্য জুন-মধ্য অক্টোবর) মৌসুম। এবারও সবচেয়ে বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছে দেওয়ানগঞ্জে।
চাষিরা বলছেন, একসময় জেলার কিছু এলাকায় ভুট্টা চাষ হলেও এখন সব জায়গায় হচ্ছে। অন্য ফসলের চেয়ে ঝামেলা কম থাকায় সবাই ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন। আগে যেসব জমি পতিত থাকতো সেসব জমিতেও এখন ভুট্টার চাষ করা হচ্ছে। বিঘাপ্রতি জমিতে ৮-১০ হাজার টাকা খরচ করে ভুট্টার ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৩০-৪০ মণ। গতবারের মতো বাজারদর পেলে এবারও তারা লাভের আশা করছেন।
কামাল উদ্দিন নামে এক কৃষক জানান, ভুট্টা চাষে ঝামেলা খুবই কম। ধানের চেয়ে ভুট্টা চাষে লাভ বেশি হওয়ায় আগ্রহী হচ্ছে মানুষ। ভালো ফলন হলে বিঘায় প্রায় ৩০-৪০ মণ ভুট্টা হয়। গতবার তারা ১২০০-১৩০০ টাকা মণ বাজার পেয়েছিলেন। এবারও যদি তারা একই দাম পান, তবে সব বাদ দিয়ে তিনি ভুট্টার আবাদই করবেন।
Advertisement
তবে সার, কীটনাশকসহ যাবতীয় জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেক চাষি।
কথা হয় আবুল হোসেন নামে একজনের সঙ্গে। তিনি জানান, যেভাবে সার, কীটনাশকের দাম বেড়েছে; তাতে ভালো দাম না পাওয়া গেলে বেশি লাভ করা যাবে না। তবে গত কয়েকদিনের বিরূপ আবহাওয়া কাটিয়ে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।
জামালপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতান জাগো নিউজকে বলেন, ‘কম খরচে ভুট্টার ফলন অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাই ভুট্টা চাষে ঝুঁকছে মানুষ। এক ধরনের পোকার আক্রমণ ছাড়া তেমন রোগবালাই নেই। মাত্র ১২০-১৩০ দিন পর এটি হারবেস্ট করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘টানা তিন-চার দিনের শৈত্যপ্রবাহের পর জেলায় রোদ উঠেছে। রোদ ওঠার কারণে কৃষকদের তেমন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়নি। আশা করা যাচ্ছে, এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে।’
Advertisement
মো. নাসিম উদ্দিন/এসইউ/এমএস