দেশজুড়ে

ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুজন নিহতের ঘটনায় রহস্য

কুমিল্লার মুরাদনগরে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুজন নিহতের ঘটনায় ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, পূর্বশত্রুতার জেরে ডাকাত আখ্যা দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে আইশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার ধারোরা ইউনিয়নের পালাসুতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, পালাসুতা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৭) ও কাজিয়াতল গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে নুরু মিয়া (২৮)।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শাহজাহান (২৮) নামে এক যুবক। তিনি জেলার সদর দক্ষিণের বাঘমারা গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। তাকে পুলিশি পাহাড়ায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মাইকিং করা হলেও কোথায়ও কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। এমনকি ডাকাত ধাওয়া করেছে এমন খবরও কারো জানা নেই। শুধু সন্দেহবশত স্থানীয় নাবু মিয়ার ঘর থেকে তার জামাতা নুরু মিয়াসহ তার দুই বন্ধুকে বের করে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। এতে নুরু ও তার বন্ধু ইসমাইল মারা যান।

Advertisement

জানা গেছে, যাদের গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে তাদের কেউ চুরি-ডাকাতি করতে দেখেনি। এমনকি তাদের কাছে কোনো অস্ত্রশস্ত্রও পাওয়া জানায়নি।

নিহত ইসমাইল হোসেনের মা মিনুয়ারা বেগম জাগো নিউজকে জানান, স্থানীয় আলাউদ্দিনের সঙ্গে ইসমাইলের বিরোধ চলছিল। আলাউদ্দিন বিভিন্ন সময় তাদের হুমকি-ধামকি দিতেন। গত বৃহস্পতিবার নাবু মিয়ার জামাতা নুরু মিয়া তার ছেলেকে মাহফিলের কথা বলে নিয়ে যায়। এরপর তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি সন্তান হত্যার সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য কবির জানান, যতটুকু জেনেছি আলাউদ্দিন ও ইসমাইলের মধ্যে মাদকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে বিষয়টি পুরোপুরি জানা যেতে পারে।

ধারোরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন খন্দকার বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য পাহারা বসাতে বলেছি। কেউকে পিটিয়ে মারার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কেউ উদ্দেশ্যমূলক ঘটনাটি ঘটিয়েছে কি না, পুলিশ সে ব্যাপারে তদন্ত করছে।

Advertisement

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুল মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, নিহতরা ডাকাতি করতে এসেছিল নাকি অন্য কোনো উদ্দেশে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তদন্ত চলছে। আশা করছি শিগগির সব বেরিয়ে আসবে।

নিহত দুজনের বিরুদ্ধে চুরি বা ডাকাতির কোনো মামলা আছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

জাহিদ পাটোয়ারী/এমকেআর