আন্তর্জাতিক

ব্রাজিলের নিরাপত্তা বাহিনীতে বোলসোনারো অনুগতদের বাদ দেবেন লুলা

ব্রাজিলের নিরাপত্তা বাহিনী থেকে সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো অনুগতদের বাদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুয়িজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা। সম্প্রতি দেশটিতে সরকারবিরোধী তাণ্ডব চালাতে সহযোগিতা করার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লুলা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় ব্রিটিস বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে লুলার ঘণিষ্ঠ সহযোগীরা বলছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব সদস্য ওই ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন, তাদের শনাক্ত করে বাদ দেওয়ার কাজটি জটিল হবে।

এরই মধ্যে বোলসোনারো সমর্থকদের মধ্যে কারা কারা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে তাণ্ডব চালাতে সহযোগিতা করেছেন, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। তবে কাজটিতে কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বৃহষ্পতিবার লুলা গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, মিলিটারি পুলিশের অনেকেই তাণ্ডবে সহযোগিতা করেছেন। সশস্ত্র বাহিনীর অনেকেও জড়িত। নিরাপত্তা বাহিনীর এসব সদস্যকে খুঁজে বের করার কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আমি দেখেছি, প্রাসাদের তালা ভাঙা হয়নি। সুতরাং, দাঙ্গাকারীদের ভেতরে ঢোকার সুযোগ করে দিতে প্রাসাদের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল।

‘সেনাবাহিনী সদরদপ্তরের সামনে বোলসোনারো সমর্থকরা শিবির স্থাপন করে দুমাস ধরে অবস্থান করছিলেন। এরপরও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

এ শিবিরে অবস্থানকারীরা লুলাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সামরিক বাহিনীকে অভ্যুত্থান করার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। এদিকে, এসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ব্রাজিলিয়ান সেনাবাহিনী।

রোববার (৮ জানুয়ারি) লুলাকে সরিয়ে বোলসোনারোকে ক্ষমতায় বসাতে সামরিক বাহিনীকে আহ্বান জানানো কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী দেশটির সুপ্রিম কোর্ট, কংগ্রেস ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হামলা ও ভাংচুর চালান।

Advertisement

রাজধানীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনী এসব ভবনগুলোর দিকে এগোতে থাকা উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে থামায়নি। এমনকি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কয়েকটি ছবিতে তাদের অনেককে হামলাকারীদের সঙ্গে সেলফি তুলতে ও বন্ধুসুলভ আচরণ করতে দেখা যায়।

একপর্যায়ে লুলা সরকারকে স্থানীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়ার পর একমাত্র দাঙ্গা পুলিশ মাঠে নামে ও বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়।

নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার জন্য প্রথমেই যাদের দায়ী করা হয়, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো বোলসোনারোর মিত্র ব্রাসিলিয়ার গভর্নর ইবানিস হসা। এ বিশৃঙ্খলার তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারক আলেকসান্দ্রি জি মোরাইস রোববার হসাকে বরখাস্ত করেন। তাছাড়া ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তা প্রধান ও পুলিশ প্রধানকেও গ্রেফতারের নির্দেশ দেন আদালত। 

জানা যায়, রোববার দাঙ্গাকারীরা প্রথমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ভেতরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দপ্তরের চার কর্মীর ওপর হামলা চালান। এরপর সেখানে ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করেন। এমনকি, হামলাকারীরা লুলার কক্ষের দরজা লাথি মেরে ভাঙার চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন।

প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র গুতো গুতেহিস জানান, হামলাকারীরা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দপ্তর থেকে কয়েকটি কম্পিউটার নিয়ে গেছেন। এমনকি গোপনীয় তথ্য থাকা হার্ড ড্রাইভগুলোও পাওয়া যাচ্ছে না।

সূত্র: রয়টার্স

এসএএইচ