কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) থেকে শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। সেই ঋণ পরিশোধে দেশটিকে আরও ছয় মাস সময় দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সময় বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Advertisement
এ নিয়ে সাম্প্রতিককালে চরম আর্থিক দুর্দশায় থাকা শ্রীলঙ্কাকে ঋণ পরিশোধের সময় আরও এক দফা বাড়ানো হলো। আন্তর্জাতিক ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত বড় দাতাকে আগে ঋণ পরিশোধ করার নিয়ম রয়েছে। এ কারণে শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলারের এ ঋণ ফেরত পেতে প্রায় ১৫ বছর সময় লাগার আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৪২৬তম সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হলে এ সিদ্ধান্ত আসে। পরে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভার বিষয়টি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার মতো ঝুঁকিতে ডজনখানেক দেশ, তালিকায় নেই বাংলাদেশ
Advertisement
বর্তমানে মারাত্মক আর্থিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। দেড় বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ২০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধের মতো অবস্থায় নেই দেশটি। এরই মধ্যে আরও এক দফা ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। কারেন্সি সোয়াপের মাধ্যমে নেওয়া এ ঋণ পরিশোধে প্রথমে তিন মাস সময় বাড়ানোর অনুরোধ করে শ্রীলঙ্কা। দেশটির আর্থিক অবস্থা ক্রমে আরও নাজুক হলে তাদের অনুরোধে ধাপে ধাপে সময় বাড়ানো হচ্ছে।
বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা মেটাতে ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের কাছে ঋণ চায়। ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়ে তখন দেশটির পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক ২৫ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার অনুমোদন দিলেও পরে কয়েক কিস্তিতে ২০ কোটি ঋণ ডলার দেয়। ‘কারেন্সি সোয়াপ’ ব্যবস্থায় নেওয়া এ ঋণ পরিশোধের কথা ছিল তিনমাসের মধ্যে। এ ঋণের ক্ষেত্রে লাইবর রেটের সঙ্গে ২ শতাংশ যোগ করে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়। তবে অর্থনৈতিকভাবে নাজুক শ্রীলঙ্কা সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় আলু পাঠানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’র বিষয়েও আলোচনা হয়। পর্ষদ সভায় বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ‘মুদ্রানীতির অনুমোদন এবং শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণের মেয়াদ’ নতুন করে ছয় মাস বাড়ানো।
Advertisement
শর্ত সাপেক্ষে লাইসেন্স পাওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ ফাইন্যান্স পিএলসি (প্রস্তাবিত) মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবসা করতে আইনগত বিশেষ ছাড় চেয়ে আবেদন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পেলে ডাক বিভাগের সাথে চুক্তিভিত্তিক পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’ নিজেরাই পরিচালনা করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমএফএস ব্যবসার সুযোগ নেই বলে লিজিং কোম্পানিটি শর্ত শিথিলের জন্য আবেদন করেছে। বিষয়টি পর্ষদ সভায় উত্থাপিত হয়। তবে আইনগত ছাড় দেওয়ার এখতিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেই, এটি সরকারের কাছে সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হবে। সরকার যাচাই-বাছাই শেষে সিদ্ধান্ত জানাবে।
ইএআর/এমকেআর