নওগাঁয় লাইসেন্স সংক্রান্ত তথ্য দিতে ডেকে এক সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিআরটিএ মোটরযান পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) ফয়সাল হাসানের বিরুদ্ধে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় নওগাঁ বিআরটিএ কার্যালয়ের ভেতর ও বাইরে দুদফায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিকের নাম আরমান হোসেন রুমন। তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
হামলার শিকার সাংবাদিকের অভিযোগ, নওগাঁ বিআরটিএ কার্যালয় থেকে পেশাদার ও অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে গতবছরের ৪ ডিসেম্বর তথ্য অধিকার ‘ক’ ফরমে তিনি আবেদন করেন। নিয়মানুযায়ী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য প্রদানের শর্ত থাকলেও সেই সময়ের মধ্যে তাকে তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং তথ্য না দিয়ে ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহের পরামর্শ জানিয়ে তাকে ইমেইল ও ডাকযোগে একটি চিঠি পাঠান সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার হারুন উর রশিদ।
Advertisement
এরপর নিয়মানুযায়ী আপিলের জন্য বিআরটিএ রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নওগাঁর সহকারী পরিচালক তাকে তথ্য দিতে সম্মত হয়ে অফিসে বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন বিআরটিএ অফিসে তথ্য নিতে যান ওই সাংবাদিক। সেখানে সহকারী পরিচালকের কক্ষে বসে থাকা অবস্থায় বহিরাগত দালালসহ প্রায় ৩০ জনকে সঙ্গে নিয়ে এসে তাকে লাঞ্ছিত করেন মোটরযান পরিদর্শক ফয়সাল হাসান। সাংবাদিক রুমন অফিস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আবারও সংঘবদ্ধ হামলা চালান ফয়সাল।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রানা সরদার বলেন, ‘নওগাঁ আদালতে একটি কাজে এসেছিলাম। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গেটে দেখলাম এক সাংবাদিককে বিআরটিএ ইন্সপেক্টরসহ বেশ কয়েকজন ঘেরাও করে ধাক্কাধাক্কি করছে। পরে তিনি মোটরসাইকেলে ওঠার চেষ্টা করলে তাকে টেনেহিঁচড়ে মোটরসাইকেলটিও ফেলে দেয় তারা।’
হামলার শিকার সাংবাদিক আরমান হোসেন রুমন বলেন, তথ্য দিতে ডেকে আমার ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। ফয়সালের সঙ্গে যারা ছিলেন তারা প্রত্যেকেই বিআরটিএর চিহ্নিত দালাল। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজাদ হোসেন মুরাদ বলেন, তথ্য দিতে ডেকে একজন সাংবাদিকের ওপর হামলা মোটেও কাম্য নয়। যারা এ ঘৃণিত কাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বিআরটিএ ইন্সপেক্টর ফয়সাল হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কাউকে হামলা করার জন্য নির্দেশ দিইনি বা হামলাও করিনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে।’
Advertisement
নওগাঁ বিআরটিএ সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার হারুন উর রশিদ বলেন, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমি তথ্য দিতে চেয়েছি। কিন্তু অফিসের ভেতর বা বাইরে ওই সাংবাদিকের ওপর যে হামলার কথা বলা হচ্ছে সে বিষয়ে আমি অবগত না।
আব্বাস আলী/এসআর