ব্রয়লার মুরগি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় মধ্যে রাখতে তথা পোল্ট্রি খাতকে সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
Advertisement
ব্রয়লার মুরগির মাংসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক, হেভি মেটাল ও অন্যান্য উপাদানের উপস্থিতি রয়েছে কি না, তা জানতে পরিচালিত গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান কৃষিমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
ব্রয়লার মুরগির মাংসে ক্ষতিকর কিছু নেই। এ প্রচারণার কারণে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে যেতে পারে— এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের দুটি ভূমিকা আছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী, সচিব আমরা আলাপ করছিলাম, কৃষিতে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দিই বিদ্যুতে অথচ পোল্ট্রি ফার্মও একটা কৃষি, এটাতে দেওয়া হয় না। পাট নিয়ে আমি কৃতিত্ব নিতে চাই না। গত কেবিনেট মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী খুবই পক্ষে ছিলেন আমি জোরালো বক্তব্য দিয়েছি। দেওয়ার পর...এটা তো (পাট বিষয়) পাটমন্ত্রীর ওখান থেকে আসার কথা ছিল। যেভাবেই হোক প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছিলেন, আমার যুক্তির ভিত্তিতে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছি।’
আরও পড়ুন>> ব্রয়লার মুরগি নিরাপদ, মাংস খাওয়াতে ঝুঁকি নেই: কৃষিমন্ত্রী
Advertisement
‘আমরা ২০ শতাংশ প্রণোদনা দিই, ১০০ টাকা রপ্তানি করলে ২০ টাকা প্রণোদনা পাবে। সব গার্মেন্টস ও কিছু ইন্ডাস্ট্রি এটা ভোগ করেছে। কৃষিখাত ওইভাবে এটা পায়নি। এ সরকার এসে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দিয়েছে। এরমধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অন্তর্ভুক্ত হয়নি।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আরেকটা বিষয় হলো বিদেশ থেকে যে (মুরগির খাদ্য) খাদ্য আমরা আনি। গম ও ভুট্টার দাম অনেক বেড়েছে। এটার জন্য অনেকগুলো কারণ দায়ী, এ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজারের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন।’
আরও পড়ুন>> ব্রয়লার মুরগি থেকে করোনা ছড়ায় না
‘ফার্মের মুরগি আমিষের সবচেয়ে ভালো উৎস। এটা সবচেয়ে সস্তা। এটাকে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য আমরা দু-মন্ত্রণালয় (কৃষি ও মৎস্য) প্রধানমন্ত্রী ও নীতি-নির্ধারণকদের সঙ্গে আলোচনা করে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবো, এ প্রতিশ্রুতি আমি জাতির কাছে দিচ্ছি।’
Advertisement
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘পোল্ট্রি সেক্টরে কখনো কখনো কিছু টানাপোড়েন দেখা দেয়। তা সত্ত্বেও কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বেসরকারিখাতে কাজ করা পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশেন ও অন্যান্য যারা আছেন তাদের নিয়ে কাজ করছে। কিছু ভুলভ্রান্তিপূর্ণ তথ্য বিভিন্ন জায়গায় যায়। সঠিক তথ্য না যাওয়ার কারণে অনেকে বিভ্রান্ত হন।’
আরও পড়ুন>> ব্রয়লার মুরগি বড় করতে অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প ঘাস উদ্ভাবন
বাংলাদেশে খাবারের চাহিদার একটি বড় অংশ পোল্ট্রি সেক্টর থেকে আসে জানিয়ে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ডিম ও মাংস এ সেক্টর থেকে আসে। আমরা চেষ্টা করছি একেবারে প্রান্তিক পর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত পোল্ট্রি সেক্টরকে আরও কীভাবে মানসম্মত করা যায় এবং এ সেক্টরের বিকাশে সব ধরনের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিতে।
‘পোল্ট্রি খাতের খাবারের যে উপকরণ বিদেশ থেকে আনা হয়, এর যে শুল্ক ছিল তা রেয়াত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশের ভেতরে পোল্ট্রি খাতের উৎপাদিত খাবারের উৎসে কর ও অন্যান্য কর যাতে না নেওয়া হয় সেজন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ করেছি। আমরা বিশ্বাস সরকার এনবিআও সেটা বিবেচনা করবে।
আরও পড়ুন>> পোল্ট্রির বর্জ্যে অপার সম্ভাবনা
সংবাদ সম্মেলনে কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব নাহিদ রশীদ ও কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এমএএইচ/জিকেএস