হাতকড়া আর ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়ানো বিএনপি নেতা আলী আজম কারামুক্ত হয়েছেন। এক মাস ৯ দিন কারাভোগ শেষে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি মুক্ত হন। এর আগে গাজীপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ তার জামিন মঞ্জুর করেন।
Advertisement
আলী আজম গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। চন্দ্রা এলাকায় আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় গত বছরের ২ ডিসেম্বর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাতকড়া আর ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা পড়ানোর ঘটনায় আলোচনায় আসেন তিনি। এ ঘটনা নিয়ে তখন দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরানো মৌলিক মানবাধিকার পরিপন্থি
আলী আজমের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান জানান, বিভিন্ন সংবাদপত্রের খবরসহ আলী আজমের বিষয়টি বিচারক নাজমুন নাহারের কাছে পেশ করা হয়। পরে তিনি বিস্তারিত জেনে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
Advertisement
আলী আজমের আইনজীবী জানান, জেলখানায় থাকা অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তার মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। এ কথা জানতে পেরে শেষবারের মতো মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে ১৯ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম। কিন্তু ওই দিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় ২০ ডিসেম্বর তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজায় বিএনপি নেতা, যা বলছে কর্তৃপক্ষ
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজাস্থলে উপস্থিত হন আলী আজম। বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজা পড়ান তিনি। মায়ের দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় আলী আজমকে। কিন্তু এই পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
কারাগার থেকে মুক্তির পর পর আলী আজম সাংবাদিকদের বলেন, আমার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোনো দোষ না করে মিথ্যা মালায় আমাকে জেল খাটতে হয়েছে। জেলে থাকা অবস্থায় আমার মায়ের মৃত্যুর সময় প্যারোলে মুক্তি দিলেও দুর্ধর্ষ অপরাধীদের মতো হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রেখেছে। যা খুবই অমানবিক। এতে আমি ও আমার পরিবার চরম অপমানিত হয়েছি।
Advertisement
আরও পড়ুন: জানাজায় বিএনপি নেতার হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো: তথ্যমন্ত্রী
কারাগারে থাকার সময় এবং মায়ের মৃত্যুর পর আলী আজমের বাড়িতে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। তারা তার পরিবারের খোঁজখবর নেন। এজন্য আলী আজম দলের নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মো. আমিনুল ইসলাম/জেডএইচ/