সারাদেশে বিভাগীয় শহরে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে বিএনপি। এতে অংশ নিতে ১০টি সাংগঠনিক বিভাগে গিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
Advertisement
ঢাকায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পালন হবে এ কর্মসূচি। এছাড়া দেশের অন্য শহরেও হবে গণঅবস্থান কর্মসূচি। এবার কর্মসূচি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ১০ দফা দাবি আদায়ে দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি আসতে পারে। দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বর্তমান সংসদ বাতিল, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। দীর্ঘ ৩৩ দিন কারাভোগের পর গণঅবস্থানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে থাকবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাস।
বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে হবে গণঅবস্থান কর্মসূচি। সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। আশা করছি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার বাধা দেবে না।
Advertisement
আরও পড়ুন: গাড়ি বন্ধ না করে বিএনপিকে গণঅবস্থান করতে বলেছি: ডিএমপি কমিশনার
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বিভাগীয় শহরে কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন। এরই মধ্যে কেন্দ্র থেকে গঠিত বিভাগভিত্তিক সমন্বয় টিম সংশ্লিষ্ট বিভাগের কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও জেলা, মহানগর ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করে প্রস্তুতি নিয়েছে।
গণঅবস্থান কর্মসূচিতে জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে সিলেটে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাজশাহীতে আব্দুল মঈন খান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে সেলিমা রহমান, রংপুরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় বরকতউল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামন দুদু এবং ফরিদপুরে অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান।
সূত্র জানায়, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এড়াতে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছে না জামায়াতে ইসলামী। কৌশলগত কারণে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন না করলেও ওয়ান-ইলেভেনের এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করবে দলটি।
Advertisement
এদিকে বিএনপির এই কর্মসূচিকে ঘিরে মাঠে থাকবে ৩৪ রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী পরিষদসহ আরও ১৫ সংগঠন। এছাড়া সাতদলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট মাঠে থাকবে। অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামও মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি থাকবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এবং ইয়ুথ ফোরাম, জিয়া নাগরিক সংসদ, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, জাতীয়তাবাদী চালক দলসহ ১৫টি সংগঠন।
গণঅবস্থান কর্মসূচি বাস্তবায়নে ঢাকায় সাতদলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, আর পূর্ব পান্থপথের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বড় আকারে শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতাকর্মীরা। এছাড়া সব বিভাগীয় শহরে দলটি এ কর্মসূচি পালন করবে।
আরও পড়ুন: বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচিতে নেতাদের দায়িত্ব বণ্টন
অন্যদিকে বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে ১২ দলীয় জোট। পুরানা পল্টন মোড়ে কর্মসূচি পালনের কথা জানিয়েছেন ১২ দলের জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। আরামবাগে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে সরব থাকবে মোস্তফা মোহসীন মন্টু নেতৃত্বাধীন গণফোরাম।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারের পদত্যাগের দাবিসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনগণের পক্ষে ১০ দফা ঘোষণা করেছি। এসব দাবি আদায়ে যুগপৎভাবে আমরা রাজপথে নেমেছি। ধাপে ধাপে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আমরা রাজপথে থাকবো।
নতুন কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিই আসছে। কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
কেএইচ/জেডএইচ/