জাতীয়

সরকারকে দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হচ্ছে

বিশেষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নয়, বরং ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ ও সমন্বয়ে সরকারকে ক্ষমতা দেওয়া অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এজন্য ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

Advertisement

সোমবার (৯ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এটি আগে অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়। তখন সংসদ অধিবেশন না থাকায় আমরা অধ্যাদেশ আকারে জারি করেছিলাম। এখন সংসদ চলমান আছে এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাও রয়েছে এটি সংসদে উঠানোর। অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করার জন্য এটি আবার সাধারণ প্রক্রিয়ায় সংসদে নিতে হবে। সেজন্য মন্ত্রিসভায় ঠিক আগের অধ্যাদেশটাই সংসদে উপস্থাপনের জন্য নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

আরও পড়ুন: বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ২১ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ

Advertisement

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। গত ১ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ জারি করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

এ অধ্যাদেশ বলে বিইআরসির পাশাপাশি সরকার চাইলেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়াতে বা কমাতে পারবে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধন করে সেখানে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয়ে সরকারের ক্ষমতা শিরোনামে নতুন একটি ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বিশেষ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম নির্ধারণের ক্ষমতা পেলো সরকার

Advertisement

ওই ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে, জনস্বার্থে, কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে উহাদের উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চালন, পরিবহন ও বিপণনের নিমিত্ত দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারিবে।’

বিইআরসি আইন সংশোধনের বিষয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর তখনকার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছিলেন, আমাদের এখন বিইআরসি এগুলো (দাম সমম্বয়) হ্যান্ডেল করে। কিন্তু বিইআরসির কিছু কিছু জায়গায় একটু প্রবলেম হয়, যেমন ৯০ দিন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে থাকতে পারে। কারণ, আইনে বলা আছে বিইআরসি ৯০ দিনের মধ্যে এসব শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। অনেক সময় আমাদের ইমিডিয়েট প্রয়োজন হয়, অনেক সময় তারা ঠিকভাবে ইয়ে (সমন্বয়) করতে পারে না।

আরও পড়ুন: আবারও বাড়লো এলপিজির দাম

সেজন্য বিইআরসির আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার প্রয়োজন বোধে বিভিন্ন বিশেষ কারণে এই ট্যারিফ নির্ধারণ করতে পারবে।

স্বাভাবিকভাবে দাম সমন্বয়ের কাজ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনই করবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার এক্ষেত্রে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।

আরএমএম/এমকেআর/এএসএম