কুড়িগ্রামের নদীর অববাহিকার বালু চরের পলি মাটিতে সয়াবিন চাষে করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। নদীর তীরবর্তী জমিতে সয়াবিনের হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। বালু চরের পতিত জমির পলি মাটিতে কম খরচে এ চাষাবাদ হওয়ায় সয়াবিন চাষে আগ্রহ বাড়ছে চরাঞ্চলের কৃষকদের।
Advertisement
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা দুধকুমারসহ অন্যান্য নদ-নদীর জেগে উঠা চরে পলি মিশ্রিত মাটিতে বিচ্ছিন্নভাবে সয়াবিনের চাষ করছেন কৃষকরা। বিশেষ করে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন ও নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের কপিলের চরে সয়াবিনের ব্যাপক আবাদ করা হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র চরের সয়াবিন চাষি মো. মতিয়ার রহমান বলেন, বন্যার পরেই পলি মাটিতে সয়াবিনের বীজ ছিটিয়ে ও লাইন করে রোপণ করা যায়। সয়াবিন রোপণ করা থেকে পরিপক্ব হতে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন মাস। প্রতি বিঘা জমিতে সবমিলিয়ে খরচ হয় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে সয়াবিনের বীজ উৎপাদন হয় ৭-৮ মণ। প্রতি মণ বীজ পাইকারি বিক্রি হয় ২৫০০-৩০০০ হাজার টাকা।
দুধকুমার নদীর চরের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার পরে থাকা প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমিতে এবার সয়াবিনের আবাদ করছি। ফলন তো ভালো দেখা যাচ্ছে। আসা করছি সয়াবিনের বীজ বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো। আগামী মৌসুমে সয়াবিনের চাষ আরও বাড়াবো।
Advertisement
আরও পড়ুন: তেলের দাম বাড়ায় মেহেরপুরে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা
নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সয়াবিন চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। দুধকুমার নদী অববাহিকায় বেরুবাড়ী ইউনিয়নে এ বছর প্রায় ৩৬ বিঘা জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে সয়াবিনের বীজ মার্কেটিংয়ের অভাবে লাভবান হতে পারছেন না কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, সয়াবিন তেল জাতীয় উদ্ভিদ। এ চাষে খরচ কম লাগে। পতিত জমি ও বালু চরে সয়াবিনের চাষ হয়। এর বীজ দেশ ও দেশের বাহিরে মেশিনারিস পদ্ধতিতে তেল করা হয়। আমাদের তেল জাতীয় যে ফসলের চাহিদা সয়াবিন চাষ করে তা পূরণ করা সম্ভব।
ফজলুল করিম ফারাজী/জেএস/জেআইএম
Advertisement