২০১৬ সালে বাবাকে হারায় সুরাইয়া আকতার রিনি। এরপর গত বছর (২০২২ সালে) হারায় মাকে। বাবা-মা হারিয়ে অকূল দরিয়ায় পড়ে রিনি ও তার ছোটবোন। একেতে রিনি নিজেই অসুস্থ, এরপর এখন ছোটবোনের দায়িত্বও তার কাঁধে। এ অবস্থায় আত্মীয়-স্বজনদের সামান্য সহায়তায় বেঁচে আছে দুই বোন।
Advertisement
কিডনি ও মূত্রসংক্রান্ত রোগ নিয়েই জন্মায় রিনি। জন্মের পর থেকেই অসুস্থ সে। ১৭ বছর ধরে সেই অসুস্থতা নিয়ে কাটছে তার সময়।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউশা ইউনিয়নের ফতিয়ারদাইড় গ্রামে দিনমজুর বাবার ভিটেবাড়ি ছাড়া কোনো জায়গা-জমি নেই তাদের। বাবা বেঁচে থাকতে তার আয়ে কোনোমতে সংসার চালাতেন। অভাবের সংসারে তাই রিনির চিকিৎসার একমাত্র ভরসা আত্মীয়-স্বজনরাই। তাদের অর্থের ওপর ভর করে এখনো চলছে রিনির চিকিৎসাসেবা।
রিনির আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাত্র আড়াই বছর বয়সে ভুল চিকিৎসায় রিনির একটি কিডনি কেটে ফেলেন চিকিৎসক। এরপর থেকে একটি কিডনি নিয়েই চলছে রিনির জীবনযুদ্ধ। অভাব-অসুস্থতার মধ্যেই বাবা বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যান। এরপর আত্মীয়দের সহায়তায় সংসার চলছিল তাদের। সঙ্গে রিনির চিকিৎসাও।
Advertisement
অসুস্থতা নিয়েই চলছিল রিনির পড়াশোনা। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বসার আগেই মাকে হারায় সে। গত মার্চে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মা মারা যান। ছোটবোনকে নিয়ে রিনির কান্না যেন আর থামে না। কে তাদের দেখবে, কে-ই বা তাদের চিকিৎসার খরচ মেটাবে। এই দোলাচলে রিনি পরীক্ষায় বসে। তবে গণিতে ফেল করায় ফল আসেনি। ভীষণ মনোকষ্ট নিয়ে এখন সময় কাটছে তাদের। আত্মীয়রাই তাদের দুটি ঘর করে দিয়েছে। সেই আত্মীয়দের ওপর ভর করেই এখন এই এতিম দুই বোনের জীবন চলছে।
রাজশাহীতে তিনজন ইউরোলজি চিকিৎসককে দেখানো হয়েছে রিনিকে। গত ১১ নভেম্বর সবশেষ দেখানো হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কিডনি বিভাগের চিকিৎসক মোহা. সিদ্দিকুর রহমানকে। তিনি জানিয়েছেন, রিনির বাকি একটা কিডনির অবস্থাও ভালো নেই। সেই কিডনির উন্নত চিকিৎসা না করলে তাকে হয়তো বাঁচানো যাবে না। দ্রুতই তার চিকিৎসা প্রয়োজন।
রিনির মামা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রিনির চিকিৎসায় অন্তত ১০ লাখ টাকা দরকার। এই টাকা কোনোভাবেই সংগ্রহ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এতিম এই কিশোরীর জীবন বাঁচাতে হৃদয়বান মানুষদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন তারা।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, হৃদয়বান মানুষের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা পেলে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করাবেন এতিম এই মেয়েটির। তাদের আশা, হয়তো এতে বেঁচে যাবে অনাথ কিশোরীর জীবন। পৃথিবীতে অন্য দশজনের মতো সে-ও স্বাভাবিক জীবন কাটাবে।
Advertisement
যোগাযোগ ও সহয়তা পাঠানোর ঠিকানাবিকাশ: ০১৭০৮৮৮৬৭৭০ (রফিকুল ইসলাম)সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর: ৪৬০৫০০২০৬৮৩৮২ ফারহানা ইসলাম (মামাতো বোন), সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, আড়ানী শাখা, রাজশাহী।
কেএসআর/