কথায় আছে, শিক্ষকতায় মতো মহান পেশা দুনিয়ায় আর নেই। বিশ্বজুড়ে এমন অনেক শিক্ষকের গল্প শোনা যায়, যারা জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে শত বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যান। তেমনি এক শিক্ষকের গল্প জানবো আজ।
Advertisement
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল হাক্কারির বাসিন্দা ও পেশায় স্কুল শিক্ষ মুসা টাবসান। জ্ঞানের মশাল জ্বালাতে উদ্যমী এ শিক্ষক প্রতিদিন ঘোড়ার পিঠে করে সুদীর্ঘ দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে ক্লাস নিতে যান। সে স্কুলে তার শিক্ষার্থী আবার মাত্র পাঁচজন।
শিক্ষার্থীসংখ্যা কম হোক, বেশি হোক; একজন আদর্শ শিক্ষকের কাছে তা কোনো বিষয়ই নয়। তাই তো মুসা টাবসান বলেন, বাচ্চাদের একটি মাত্র শব্দ শেখাতে পারলেও আমি স্বার্থক, সফল আমার এ ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা। শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতেই আমি এত কষ্ট করে স্কুলে ক্লাস নিতে যাই।
জানা যায়, মুসার নিজের কোনো গাড়ি নেই, আছে শুধু একটি ঘোড়া। তাই তাকে যখন বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের একটি স্কুলে নিয়োগ দেওয়া হলো, তখন বিশ্বস্ত ঘোড়াটিকে নিয়েই স্কুলে যাতায়াত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
Advertisement
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মুসার স্কুলে যাওয়ার পাহাড়ি পথটি মোটেও মসৃণ নয়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু, আবার কোথাও বরফে ঘেরা, কোথাও আবার কর্দমাক্ত। তবে, সবকিছু পার করেই মুসাকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো করেই স্কুলে পৌঁছে দেয় দীর্ঘদিনে সঙ্গি ঘোড়াটি।
স্কুলে যাতায়াতের বিষয়ে মুসা বলেন, শীতের সকালে এ এলাকার তাপমাত্রা খুবই কম থাকে। কিন্তু স্কুলে পৌঁছে যখন উৎফুল্ল শিক্ষার্থীদের দেখতে পাই, তখন আমি আমার সব কষ্ট ভুলে যাই। তাছাড়া বাচ্চারাও আমাকে ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে আসতে দেখতে খুব পছন্দ করে।
‘গ্রীষ্মকালে স্কুল যাত্রাটি উপভোগ করলেও, তীব্র শীতে পথটি খুবই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সেসময় পথে প্রায় ১ মিটার উঁচু বরফের আবরণ তৈরি হয়। তার মধ্য দিয়ে ঘোড়ায়ে করে চলাচল করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে।’
তিনি আরও জানান, আসন্ন শীতে সাময়িকভাবে স্কুলের পাশে কোনো স্থানে ঘর নিয়ে থাকার পরিকল্পনা করছেন। শীত শেষে বসন্তকাল এলে আবারও ঘোড়ার পিঠে চড়ে স্কুলে যাতায়াত শুরু করবেন তিনি।
Advertisement
সূত্র: ডেইলি সাবাহ
এসএএইচ