বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক। ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের বামপন্থী ও ফিলিস্তিনি সদস্যরা এ বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন।
Advertisement
রোববার (৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (৭ জানুয়ারি) তেল আবিব শহরে হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সদ্যগঠিত সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। এসময় তারা সদ্য গঠিত এ সরকারকে গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক, ফ্যাসিবাদ ও বর্ণবাদী বলে আখ্যা দেন।
এমনকি, অনেকে ইসরায়েলি ও রংধনু পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। অনেকে আবার ‘ক্রাইম মিনিস্টার’ লেখা নিয়ে হাজির হন। ক্রাইম মিনিস্টার শব্দ দুটি বিগত বছরগুলোতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে নিয়মিত বিক্ষোভের সময় ব্যাপকভাবে ব্যবহুত স্লোগানের মধ্যে একটি।
Advertisement
এসময় বিক্ষোভকারীরা দেশটির বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিনের নিন্দা করেন। তাদের দাবি, বুধবার (৪ জানুয়ারি) লেভিন বিচার ব্যবস্থায় এমন সংশোধন ঘোষণা করেছেন, যা দেশের সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করে ফেলবে।
এ সংশোধনীর ফলে দেশটির পার্লামেন্ট সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তগুলোকে বাতিল করার ক্ষমতা পাবে।
ড্যানি সাইমন নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা সত্যিই ভয় পাচ্ছি, কারণ আমাদের দেশ গণতন্ত্র হারাতে চলেছে। আমরা শিগগির এ স্বৈরাচারী শাসকের হাত থেকে মুক্তি পেতে চাই।
অনেকে আবার বলছেন, ডানপন্থি নতুন এ সরকার অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের নীতি অনুসরণ করছে ও এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের সদস্য-সমর্থকদের উদ্বিগ্ন করে এমনসব সামাজিক সংস্কার আনতে যাচ্ছে।
Advertisement
২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের বিষয়টি পাস হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নেতানিয়াহু। আস্থা ভোটে পার্লামেন্টের ১২০ সদস্যের মধ্যে ৬৩ জন নতুন সরকারের পক্ষে ভোট দেন।
জানা যায়, নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় এমন রাজনীতিবিদ রয়েছেন, যার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে ও তিনি এ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাছাড়া, কট্টোর ডানপন্থি ওই নেতা ফিলিস্তিনে বর্বর গণহত্যা চালেয়েছিলেন বলেও শোনা যায়।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিজেও আদালতে দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।
নেতানিয়াহু এর আগে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল এবং ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি তৃতীয় মেয়াদে ইহুদি এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন। এরই মধ্যে তিনি ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের রেকর্ড গড়েছেন।
সূত্র: আল-জাজিরা
এসএএইচ