দেশজুড়ে

‘বীর নিবাস’ নির্মাণে অনিয়ম, কাজ বন্ধ করলেন ইউএনও

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত ‘বীর নিবাসের’ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রশাসন। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যাবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে এ কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুন মুন জাহান লিজা।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ১২টি এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৯টি ঘর অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘরের ব্যয় ধরা হয় ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। এরমধ্যে ছয়টি ঘরের কাজ পায় ওয়াফী এন্টারপ্রাইজ। এর একটি ঘর বরাদ্দ পান উপজেলার সূর্যনগর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের। তিনি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (৭ জানুয়ারি) ইউএনও মুন মুন জাহান লিজা ও বকশীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ তালুকদার তদন্ত শুরু করেন এবং মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের নির্মাণাধীন বীর নিবাস পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেন তারা।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের বলেন, ‘যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। পুরস্কার হিসেবে কিছুই আশা করি না। কিন্তু সরকার আমাদের কথা চিন্তা করে ঘর দিয়েছেন। অথচ সেই ঘরেই নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার হয়েছে। বিষয়টি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। উপজেলা প্রশাসন পরিদর্শনে এসে ঘটনার সত্যতা পেয়ে কাজ বন্ধ রেখেছে।

Advertisement

অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয় জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি সিডিউল মাফিক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। কাজ প্রায় শেষের দিকে। তবে নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি।’

উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের বাড়িতে গিয়েছিলাম। অভিযোগ সত্য কি-না তা তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর জানা যাবে। সে পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মজনুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্লাস্টারও শেষ। তাই পুরোকাজে অনিয়ম হয়েছে কি-না সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু অনিয়মের চিত্র দেখা গেছে। তাই আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন ইউএনও।

ইউএনও মুন মুন জাহান লিজা জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরেজমিনে যাই। যেহেতু অভিযোগ এসেছে তাই তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না আসা পর্যন্ত সাময়িকভাবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Advertisement

মো. নাসিম উদ্দিন/এসজে/জেআইএম