বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে তিনটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুখপাত্র এ তথ্য জানান।
Advertisement
মিয়ানমারের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট জানায়, রাজধানী নেপিডোতে শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি (এসএসপিপি), ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি (ইউডব্লিউএসপি) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির নেতাদের সঙ্গে তিন দিনের আলোচনায় বসেছে জান্তা সরকারের প্রতিনিধিরা।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাঅভ্যুত্থানের পর থেকেই এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরেও পাঁচটি ছোট জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনায় বসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। সেসময় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনাকে সমর্থন করে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছিল।
Advertisement
উত্তর শান রাজ্য নিয়ন্ত্রণকারী এসএসপিপি’র এক মুখপাত্র বলেছেন, সামরিক বাহিনী আমাদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দেওয়ার অনুরোধ করেছে। আমরা এ নির্বাচনের বিরোধিতা করবো না।
মিয়ানমারে অন্তত ২০টি বিদ্রোহী জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। এসব গোষ্ঠী কয়েক দশক ধরে স্বায়ত্তশাসন, মাদক ব্যবসা ও প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণের জন্য একে অন্যের সঙ্গে লড়াই করছে। তাছাড়া দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গেও লড়াই আসছে তারা।
এগুলোর অন্যতম হলো, ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি (ইউডব্লিউএসপি)। প্রায় ২৫ হাজার স্থায়ী সদস্য নিয়ে ইউডব্লিউএসপি’র সামরিক শাখা গঠিত। এমনকি, এটি বিশ্বের বৃহত্তম অ-রাষ্ট্রীয় সামরিক বাহিনীগুলোর মধ্যে একটি।
২০২০ সালের নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনে ২০২১ সালের অভ্যুথ্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। যদিও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলেছিলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল।
Advertisement
ওই নির্বাচনে অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) পার্টি ব্যাপক ভোটে জয়লাভ করে।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি বক্তৃতার সময় দেশটির সামরিক নেতা জেনারেল মিন অং হ্লাইং নির্বাচন আয়োজনের ইঙ্গিত দেন। যদিও নির্বাচনটি কখন অনুষ্ঠিত হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে ব্যাপক রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠীর মতে, জান্তা সরকারের দমনমূলক অভিযানে আড়াই হাজারেরও মানুষ নিহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে সাড়ে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষকে।
সূত্র: আল-জাজিরা
এসএএইচ