জাতীয়

অটোমেশনের আওতায় আসছে চট্টগ্রাম ওয়াসা

সিস্টেম লস কমিয়ে গ্রাহকদের পানি সরবরাহ ও বিলিং পদ্ধতি আধুনিক করতে অটোমেশনের আওতায় আসছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। পানির অপচয় এবং চুরি রোধে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক পর্যায়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে চান্দগাঁও এলাকায় তিন হাজার স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু হবে।

Advertisement

ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদনের ক্ষমতা এখন প্রায় ৫০ কোটি লিটার। এরমধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ অপচয় হয় সিস্টেম লস বা নন-রেভিনিউ খাতে। লিকেজের কারণে পানি চুরিও হয়। এ অবস্থায় দীর্ঘদিনের সংকট কাটাতে বিলিং সিস্টেমকে অটোমেশন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। স্মার্ট মিটার বসানোর প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। পাইলট প্রকল্পের আওতায় আগামী মাসে (ফেব্রুয়ারি) নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় বসছে ৩ হাজার পিওর আল্ট্রাসনিক ডিজিটাল মিটার।

২০১৯ সাল থেকেই অটোমেশন শুরুর চিন্তা ছিল চট্টগ্রাম ওয়াসার। শুরুতে অ্যানালগ ও ডিজিটাল- দুটি ডিভাইস সংযুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু ক্যাবল কাটা পড়লে সমস্যা হতে পারে বিধায় বিলিং সিস্টেম পরিচালনায় সম্পূর্ণ ডিজিটাল ডিভাইস খুঁজছিল কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালের শুরুর দিকে নগরীর লালখানবাজার এলাকার হাইলেভেল রোড ও বাঘঘোনায় পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয় ৫টি স্মার্ট মিটার। এক বছরের ব্যবহারে এসব মিটারের সুফল পাওয়ায় পাইলট প্রকল্প নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওয়াসা।

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি ডিজিটাল মিটারের ব্যাপারে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় কার্যাদেশ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) কর্তৃক পরীক্ষিত নির্ধারিত মানের মিটার তৈরির জন্য সময় দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। সবমিলিয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে ৩ হাজার সংযোগে স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement

শুরুতে নগরীর চান্দগাঁও এলাকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের বিলের হিসাব করা হবে ডিজিটাল এসব মিটারে। অনলাইনে এসব মিটারের বিল দেওয়া যাবে। পাইলট প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে এরপর পর্যায়ক্রমে সব সংযোগকে এর আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, তিন হাজার স্মার্ট মিটার বসানোর জন্য বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু করবে তারা। প্রথমে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই তিন হাজার মিটার চান্দগাঁও এলাকায় বসানো হবে। এরপর ধীরে ধীরে ওয়াসার পুরো পানি সরবরাহ সিস্টেম হবে ডিজিটাল।

এদিকে, ২০২০ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসার এক তদন্তে উঠে আসে, লিকেজ সমস্যার কারণে উৎপাদিত পানির ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ অপচয় হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীর ৮০ শতাংশ এলাকায় পানি সরবরাহ করে ওয়াসা। পানির অপচয় রোধ করা গেলে নগরীর প্রায় শতভাগ এলাকায় পানি সরবরাহ করা সম্ভব বলে মত সংশ্লিষ্টদের।

ইকবাল হোসেন/কেএসআর/এমএস

Advertisement