ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির ফলে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন মেহেরপুরের কৃষকরা। গত বছরের তুলনায় জেলায় এবার এক হাজার ৭৪০ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। ছাড়িয়েছে লক্ষ্যমাত্রা। অনুকূল আবহাওয়া আর বাজারে চাহিদা ও ন্যায্যমূল্য থাকায় সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি অফিস বলছে, স্থানীয়ভাবে তেলের ঘাটতি পূরণের জন্য কৃষি বিভাগ প্রণোদনা ছাড়াও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে।
Advertisement
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবার পাঁচ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় এক হাজার ৭৪০ হেক্টর বেশি। কৃষকরা স্থানীয় জাতের পাশাপাশি বারি সরিষা ১৪, ১৫, ১৭ ও বিনা ৯, ৪, ১১ ও টোরি ১৭ জাতের সরিষা চাষ করেছেন।
কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বাজারে সরিষার চাহিদা থাকায় চাষিরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন সরিষা চাষে। অনেকেই দো-ফসলি জমিতে সরিষা আবাদ করছেন। আবার অনেকেই সাথী ফসল হিসেবেও সরিষা আবাদ করছেন। কয়েক বছর ধরে সরিষার দাম বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে তেলের দাম।
মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার গোরিনগরের কৃষক সাবদার হোসেন জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে এক হাজার ৫০০ টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে ৩৫-৪০ হাজার টাকায় সরিষা বিক্রি করতে পারবেন। পাশাপাশি বাড়িতে তেল খেতে পারবেন।
Advertisement
একই গ্রামের আরেক কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, বর্তমানে সরিষার দাম ভালো। সেই সঙ্গে বেড়েছে তেলের দাম। ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বেশি লাভের জন্য এবার আড়াই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি।
মেহেরপুর সদর উপজেলার কৃষক রুহুল আমিন জানান, তিনি এবার দেড় বিঘা জমিতে রাই এবং দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।
একই গ্রামের আরেক কৃষক মাহাতাব আলী জানান, সরিষা চাষে খরচ এবং পরিশ্রম দুটোই কম লাগে। ফলনও ভালো হয়। বর্তমানে বাজার দাম ভালো সরিষার। তাই এই বছর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে সরিষা ও রায়ের আবাদ করেছি।
ঝিনাইদহ থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসা আব্দুল সাত্তার বলেন, মেহেরপুর মুজিবনগরের গোরিনগর বলনাগার মাঠে বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক সরিষার আবাদ হয়েছে। তাই মৌমাছি ও মধুর ১০০ বক্স নিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য আসছি। মৌমাছি সরিষার ফুলে বসলে সরিষার পরাগায়ন হয়। এখান থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০০ কেজি সরিষার মধু সংগ্রহ করা যায়। যার বাজার মূল্য এক লাখ টাকা। এই মধু সংগ্রহ করে আমরা লাভবান হচ্ছি। পাশাপাশি সরিষার ফলনও ভালো হবে।
Advertisement
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামসুল আলম বলেন, স্থানীয়ভাবে তেলের ঘাটতি পূরণের জন্য কৃষি বিভাগ প্রণোদনা ছাড়াও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে। গেলো বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে
আসিফ ইকবাল/জেডএইচ/জিকেএস