বিশ্ব অর্থনীতির জন্য তিন দশকের মধ্যে অন্যতম বাজে বছর হতে চলেছে ২০২৩। সম্প্রতি ব্লুমবার্গ ইকোনমিকসের পূর্বাভাসে এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে যে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাবেই এমন দশা হতে পারে বলে উল্লেখ করেছে তারা।
Advertisement
নতুন বিশ্লেষণে অর্থনীতিবিদ স্কট জনসন পূর্বাভাস দিয়েছেন, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ। এটি ২০২২ সালের অনুমিত ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কম তো বটেই, উপরন্তু ২০০৯ ও ২০২০ সালের সংকটময় সময় বাদ দিলে ১৯৯৩ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।
আরও পড়ুন>> বছরের শুরুতেই দেখা দিতে পারে তেল-গ্যাস সংকটআরও পড়ুন>> পকেট বাঁচাতে বিকল্প খাবারে ঝুঁকবে মানুষ
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে এবং ২০২৩ সালের শুরুতে ইউরো অঞ্চলে মন্দাভাব শুরু হতে পারে। বিপরীতে, নতুন বছরে চীনের অর্থনীতির আকার বাড়তে পারে পাঁচ শতাংশের বেশি। শিগগির জিরো কোভিড নীতি প্রত্যাহার এবং সংকটাপন্ন সম্পত্তি বাজারে বাড়তি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ২০২৩ সালেও চীনা অর্থনীতি শক্তিশালী থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Advertisement
জনসনের মতে, মুদ্রানীতির ক্ষেত্রেও দেশে দেশে পার্থক্য দেখা যেতে পারে। তিনি লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার ওপরে থাকলে আমি মনে করি, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক পাঁচ শতাংশ টার্মিনাল রেটের দিকে যাচ্ছে এবং ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত এটি চলবে। ইউরো অঞ্চলে মূল্যস্ফীতির আরও দ্রুত পতনের অর্থ হবে নিম্ন টার্মিনাল রেট এবং ২০২৩ সালের শেষের দিকে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন>> মন্দার জেরে ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যে দাঙ্গার আশঙ্কাআরও পড়ুন>> ইউরোপীয় কূটনীতির চরম পরীক্ষা নেবে ইউক্রেন যুদ্ধ
অন্যদিকে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা ও মুদ্রার দুর্বলতা নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকা চীনে ‘সীমিত’ সুদহার কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন>> এশিয়ার আবাসন ব্যবসায় অশুভ ছায়াআরও পড়ুন>> নতুন বছরে যে ১০ বিষয়ে নজর থাকবে সবার
Advertisement
গত বছরের জানুয়ারিতে চীনের সিকিউরিটিজ নিয়ন্ত্রকরা যখন বাজারের অস্থিরতা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তখনই কিছু অর্থনীতিবিদ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০২২ সাল হবে সবচেয়ে অশান্ত। বছরের শেষাংশে সেই প্রবণতা বেড়েছে এবং ২০২৩ সালে আরও অস্থিরতার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।
চীনা শেয়ারবাজার এখন নিয়মিতই দিনে পাঁচ শতাংশের বেশি ওঠানামা করছে। অফশোর ইউয়ানে অস্থিরতা রেকর্ড গড়ার পথে এবং খেলাপির বিরুদ্ধে চীন সরকারের ঋণ বীমা খরচ বহু বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন>> যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে প্রযুক্তি যুদ্ধ কেবল শুরু
সূত্র: ব্লুমবার্গকেএএ/