দেশজুড়ে

সময় ফুরিয়ে গেলেও হয়নি সেতু, চরম দুর্ভোগে ৫০ গ্রামের বাসিন্দা

নির্ধারিত সময় পার হলেও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বস্তল-পেরাব সড়কের সেতু পুনর্নির্মাণ হয়নি। দেড় বছর আগে পুরোনো সেতু ভেঙে ফেলায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ৫০ গ্রামের বাসিন্দারা। ফলে বাধ্য হয়ে বেহাল সড়কে চলাচল করছেন তারা।

Advertisement

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বস্তল-পেরাব সড়কের আমবাগ খালের ওপর সেতুটি নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস সরকার। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৪৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ২০২২ সালের নভেম্বরে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

সেতুর কাজের জন্য ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় ভেঙে ফেলা হয় আমবাগ খালের ওপর থাকা পুরাতন সেতুটি। তখন দুই প্রান্তের মানুষের চলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক হিসেবে সেতুর পাশে একটি অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করা হয়।

এদিকে দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো ওই সেতুর কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস সরকার। সেতুর পাইলিংয়ের কাজ করেই বন্ধ রাখে কাজ। ফলে নির্মিত অ্যাপ্রোচ সড়কের এখন বেহাল দশা। এ অবস্থাতেই বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীকে চলাচল করতে হচ্ছে। আবার পেরাব এলাকায় বাংলার তাজমহল ও পিরামিড অবস্থিত। এ কারণে প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী এ সড়ক ব্যবহার করে তাজমহলে গিয়ে থাকেন। ফলে দর্শনার্থীদেরও এক প্রকার দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।

Advertisement

মো. আবু আলেম দিপু নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, গত বছরে ছোট এ সেতুটির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো অর্ধেক কাজও করতে পারেনি। কবে এ সেতুর কাজ শেষ হবে আর কবে আমাদের ভোগান্তি শেষ হবে কি-জানি। ভোগান্তি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

ইসমাইল হোসেন টিপু নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, সেতুটি এখনো নির্মাণ না হওয়ায় আমাদের ব্যবসায়িক ক্ষতি হচ্ছে। ভাঙা সড়ক দিয়ে আমাদের মালামাল পাঠাতে হচ্ছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে প্রায় সময় গাড়ি থেকে মালামাল পড়ে যায়।

মো. আলমগীর হোসেন নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, ছোট ছোট যানবাহনগুলোকে এখান দিয়ে অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। আমাদের পাশাপাশি যাত্রীদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় এখানে ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটছে।

নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ডা. আল ওয়াজেদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি থাকবে শিগগির যেন সেতুর কাজ শেষ করা হয়। জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, আমি প্রতিনিয়ত ঠিকাদারকে কাজটি দ্রুত শেষ করার তাগাদা দিচ্ছি। কিন্তু এখনো শেষ করতে পারেনি। বর্ষা মৌসুমে কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। গত কয়েকদিন ধরে আবার কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

কয়েকটি কারণে এতদিন কাজ বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছেন সড়কটির দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস সরকারের স্বত্বাধিকারী বুলবুল আহম্মেদ। তিনি জাগো নিউজ বলেন, এখন কাজ চলমান আছে। আমরা চেষ্টা করছি তাড়াতাড়ি এ কাজ শেষ করার।

উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আরজুরুল হক জাগো নিউজকে বলেন, বাজেট স্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। সেতু নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এতদিন পানি জমে থাকার কারণে কাজ দ্রুত করা যায়নি। বর্তমানে এ প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। আশা করছি এ বছরের মধ্যেই সেতুসহ সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হবে।

এসজে/এমএস