চীনে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভ্রমণসহ বিভিন্ন দেশের বিধিনিষেধ ও সতর্কতা জারি করাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছে বেইজিং। এর ফলাফল হিতে বিপরীত হতে পারে বলেও সতর্ক করছে চীনা কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও যুক্তরাজ্যসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ চীন থেকে দেশে ফেরার পর যে কোনো ব্যক্তির করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। এতেই ক্ষেপেছে বেইজিং।
সম্প্রতি জিরো কোভিড নীতি শিথিল করার পর চীনে হু হু করে বাড়তে শুরু করে করোনা সংক্রমণ। অভিযোগও আছে, করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু কম করে দেখানো হচ্ছে।
চীনের শেষ দৈনিক কোভিড রিপোর্ট যদি ধরা যায় তবে দেখা যায় যে, গত ২৪ ডিসেম্বর সংক্রমণ সংখ্যা ছিল ৫ হাজার। তবে কয়েকজন বিশ্লেষক দাবি করেন, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখের বেশি। শুধু তাই নয় ওই মাসে করোনা আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ৪০ লাখ।
Advertisement
তথ্যের অভাব ও চীন সরকারের কোভিড সংক্রান্ত ঘোষণা না থাকায় গত ৮ জানুয়ারি থেকে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। গত কয়েক দিনে এক ডজনেরও বেশি দেশ চীন থেকে ফেরত লোকজনের কোভিড পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) চীনকে আহ্বান জানিয়েছে, করোনা সংক্রান্ত সঠিক তথ্য জানানোর জন্য। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, বেইজিং বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে ইচ্ছুক।
মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা বিরোধী এবং পারস্পরিক নীতি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
২০২০ সালের মার্চ থেকে চীনের সীমান্ত মূলত বন্ধ করে দেওয়া হয় করোনা সংক্রমণের কারণে। ফলে খুব কম বিদেশি দেশটিতে ভ্রমণ করতে পেরেছেন এবং তাদের পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
Advertisement
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রোগ প্রতিরোধ সংস্থা ও অস্ট্রেলিয়ার চিফ মেডিকেল কর্মকর্তা উভয়েই যুক্তি দিয়েছেন, টিকা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোভিডের হুমকিকে কমিয়ে দিতে পারে। তা সত্ত্বেও, ইইউসহ অনেক দেশ চীন থেকে ফেরত লোকজনের জন্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন মঙ্গলবার বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা ফরাসি জনগণকে রক্ষা করার জন্য আমাদের দায়িত্ব পালন করছি।’
এর আগেও চীনের উহান থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে।
তবে চীনকে করোনা মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন টিকা কার্যক্রমে সহায়তা করতে চাইলে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং।
চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডোজ দেওয়া হয়েছে দেশটির নাগরিকদের। দেশটির সরকার এখন পর্যন্ত শুধু নিজেদের তৈরি ভ্যাকসিন ব্যবহার করার ওপর জোর দিয়েছে। এসব ভ্যাকসিন ওমিক্রন ঠেকাতে অন্যান্য পশ্চিমা-উন্নত এমআরএনএ ভ্যাকসিনের তুলনায় কম কার্যকর বলে ধারণা করছেন পশ্চিমারা।
সূত্র: বিবিসি
এসএনআর/এমএস