দেশজুড়ে

পাঁচশতাধিক খামার দেখভালের দায়িত্বে চারজন

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার অবস্থান উপকূলীয় অঞ্চলে হওয়ায় এখানে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন প্রাণির পাঁচশতাধিক খামার দেখভালের দায়িত্ব এই প্রতিষ্ঠানটির ওপর। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে চলার কারণে প্রতিষ্ঠানটি সেই সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোনাগাজী উপজেলা সদর, চর মজলিশপুর, বগাদানা, মঙ্গলকান্দি, মতিগঞ্জ, চর দরবেশ, চর চান্দিয়া, আমিরাবাদ, নবাবপুর ও পৌরসভার নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত মিলে দুই শতাধিক গাভীর খামার, ৮৯টি মহিষ, ২০টি ছাগল, ২৭টি ভেড়া, লেয়ার মুরগির তিন শতাধিক, ব্রয়লার মুরগির ১৫০টি, হাঁসের ১৫টি, সোনালি মুরগির ৯টি, টার্কির ২০টি আর কবুতরের ২০টি খামার রয়েছে। এসবের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র।

এসব খামার দেখভালের জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকতে হয় কর্মরত চিকিৎসকের। শিডিউল তৈরি করে একেকদিন একেকটি খামার পরিদর্শন করতে হয়। অন-কলে যেকোনো মুহূর্তে প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে যেতে হয় খামারে। সচেতনতার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, ক্যাম্পিং, আলোচনা সভা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, সমসাময়িক প্রকল্পের বাস্তবায়ন, বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের তালিকা করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হয়। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জাতীয় দিবস, সমন্বয় সভা, মাসিক সভা, ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে হয় এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের।

কিন্তু অফিসের প্রধান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নেই প্রায় ১৫ মাস। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এর পর থেকে ভেটেরিনারি সার্জন ডা. কল্লোল বড়ুয়া ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তা ছাড়া এখানকার ১১টি পদের বিপরীতে মাত্র চারজন কর্মরত।

Advertisement

বর্তমানে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদটি শূন্য। এর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছেন ভেটেরিনারি সার্জন ডা. কল্লোল বড়ুয়া। ভেটেরিনারি মাঠ সহকারী তিনটি পদের বিপরীতে আছেন দুজন। কৃত্রিম প্রজনন কর্মীর দুটি পদই শূন্য। অফিস সহকারীর একটি পদও শূন্য। ড্রেসার কর্মীর পদটি শূন্য। পিয়নের একটি পদও শূন্য রয়েছে।

উপজেলা খামার সমিতির সভাপতি নাছির উদ্দিন অপু বলেন, সোনাগাজীতে বিভিন্ন সময় দুর্যোগের কারণে আমরা খামারিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হই। উপজেলা কর্মকর্তাসহ অনেকেই নেই। তাছাড়া চিকিৎসকও পাওয়া যায় না।

সোনাগাজী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কল্লোল বড়ুয়া বলেন, দীর্ঘ ১৫ মাস উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদটির ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছি। এছাড়া ১১টি পদের বিপরীতে মাত্র আমরা চারজন কর্মরত আছি। কাজের অনেক চাপ। সব কাজ সময়মতো করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফেনী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিছুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিষয়টি সরকারের বিষয়। এছাড়া অন্য পদগুলো শুধু সোনাগাজী উপজেলা নয়, ফেনী জেলাসহ দেশের অনেক অফিসেই শূন্য। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে দ্রুত এর সমাধান হয়।

Advertisement

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এমআরআর/জেআইএম