অর্থনীতি

বছরের দ্বিতীয়দিনে তলানিতে লেনদেন, আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

নতুন বছর ২০২৩ সালে এসে শেয়ারবাজারের লেনদেন খরা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। লেনদেন কমতে কমতে দেড়শ কোটি টাকার নিচে নেমে গেছে। ২০২০ সালের ৭ জুলাইয়ের পর এত কম লেনদেন আরও হয়নি।

Advertisement

লেনদেন খরার সঙ্গে দেখা দিয়েছে টানা দরপতন। সোমবার (২ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। এতে পতন হয়েছে সবকটি মূল্যসূচকের। এর মাধ্যমে নতুন বছরের প্রথম দুই কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।

নতুন বছরের শুরুতে এমন মন্দাভাব দেখা গেলেও ২০২২ সালের শেষ দুই কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী ছিল শেয়ারবাজার। ফলে নতুন বছরের শুরুতে ভালো শেয়ারবাজারের দেখা মিলবে এমন প্রত্যাশায় ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বছরের শুরুতেই টানা দরপতন ও লেনদেন খরা দেখতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। লেনদেনের পুরো সময়জুড়েই দরপতনের ধারা অব্যাহত থাকে এবং লেনদেনের শেষদিকে এসে দরপতনের মাত্র বেড়ে যায়।

Advertisement

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র সাত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৮টির। ১৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৪৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৭৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেনি, ২০২০ সালের ৭ জুলাইয়ের পর ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হলো। ২০২০ সালের ৭ জুলাই ডিএসইতে ১৩৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর ডিএসইতে আর দেড়শ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়নি।

Advertisement

এমন লেনদেন খরার দিনে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মুন্নু সিরামিকের ৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে— আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, বসুন্ধরা পেপার, চাটার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনেক্স ইনফোসিস এবং মনোস্পুল পেপার।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ১২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাতটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫১টির এবং ৮৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এমএএস/এমএএইচ/এএসএম