অর্থনীতি

প্রস্তুতি শেষ না করেই বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন

চলছে স্টল, প্যাভিলিয়ন তৈরির কাজ। মেলা প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। অস্থায়ী শিশুপার্কে শুধু রাইড বসানো শুরু হয়েছে। প্রস্তুত হয়নি কুড়িল বিশ্বরোড বাণিজ্যমেলা গামী বিআরটিসি বাসের কাউন্টারও। তারপরেও রোববার (১ জানুয়ারি) উদ্বোধন করা হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা।

Advertisement

এদিন দুপুর ১২টায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার (ডিআইটিএফ) ২৭তম আসরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই মেলায় আগত দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিকেল হতে না হতেই একরকম মানুষে পূর্ণ হয়ে যায় পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। যদিও উদ্বোধনের আগেই মেলার স্টল বানানো বা সাজানোর কথা, তবে প্রস্তুতি শেষ হয়নি। এখনো চলছে স্টল-প্যাভিলিয়নের কাজ।

এক্সিবিশন সেন্টার এ- এর  প্রায় অর্ধেক স্টলের নির্মাণ শেষ হয়েছে। তবে এক্সিবিশন সেন্টার বি ও এক্সিবিশন সেন্টার এ-এর বাইরে খোলা প্রাঙ্গণে বেশিরভাগ স্টলই পুরোপুরিভাবে তৈরি হয়নি। চলছে স্টল বানানো ও পণ্য দিয়ে সাজানোর কাজ। মেলা কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হবে মেলার প্রাঙ্গণের স্টলের সব প্রস্তুতি। যদিও এর আগে মেলার আয়োজক বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানিয়েছিল গত বছরের ২৫-২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।

Advertisement

এদিকে, পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় বেচাকেনা তেমন একটা শুরু হয়নি। প্রথম দিন মেলায় বেশিরভাগ মানুষই ঘুরতে এসেছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী। মেলায় লোভনীয় খাবার আর হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে নান্না ভাই বিরিয়ানি, মি বাইটসহ একাধিক স্টল। আর খাবারের দোকানের পাশে তৈরি হচ্ছে অস্থায়ী শিশুপার্ক। রাইড বসানো ও যন্ত্রপাতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে সেখানে।

জয়িতা ফাউন্ডেশনের ফ্লোর ম্যানেজার তানিয়া রোখসানা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের এখান থেকে কিছু জামা, কাপড় ও চাদর নিয়েছেন। কয়েন রাখার লেদারের ছোট ব্যাগ ও শাড়ি নিয়েছেন। আমরা এখনো গুছিয়ে নিতে পারিনি। কাল (সোমবার) থেকে পুরোপুরি প্রস্তুত হবে আমাদের স্টল।

এক্সিবেশন সেন্টার বি প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলছে আইসক্রিম স্টল কুলফিডোর নির্মাণ কাজ। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সেলস এক্সিকিউটিভ ফয়সাল আহমদ বলেন, এখন ডেকোরেশন ও লাইটিংয়ের কাজ চলছে। আগামীকাল (সোমবার) পুরোপুরিভাবে স্টল প্রস্তুত হবে।

ইরানি জুয়েলারি স্টলের কর্মচারী গোলাম সারওয়ার বলেন, তিনদিন ধরে কাজ করছি। এখন লাইটিংয়ের কাজ বাকি আছে। কালকেই স্টল রেডি হবে।

Advertisement

মেলায় আগত রফিকুল ইসলাম নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আজ প্রথম দিনে মেলায় আশা মূলত ঘুরতে। এর মধ্যে কোনো পছন্দের পণ্য কম দামে পেলে কেনার ইচ্ছা আছে।

অন্যদিকে কুড়িল থেকে মেলা প্রাঙ্গণে আসা বিআরটিসি বাস কাউন্টার এখনো প্রস্তুত হয়নি। দুপুর ২টায় কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, টিকিটের জন্য যাত্রীদের ভিড়। কিন্তু তারা টিকিট পাচ্ছে না। পরে অন্য বাসে ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে মেলায় যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

মেলার প্রস্তুতি শেষ না হওয়ার বিষয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ভিভিআইপি অনুষ্ঠানের জন্য অনেক স্টলে কাজ একটু স্লো রেখেছি, নিরাপত্তার বিষয়গুলো মাথায় রেখে। কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। এ হলের বেশিরভাগ স্টল রেডি হয়েছে, বি হলের ৫০ শতাংশ স্টল হয়েছে। এসব মেলায় আপনারা দেখবেন সবসময় শেষ মুহূর্তে কাজ হয়।

তিনি বলেন, এ বছর আমরা এক মাস সময় দিয়েছি, তারা কাজ শেষ করতে পারেনি। এখন যেহেতু মেলা শুরু হয়েছে এখন স্টল মালিকরা নিজ তাগিদেই মেলার কাজ দ্রুত শেষ করবেন।

ইফতেখার আহমেদ বলেন, এবার যাতায়াতে যেন ভোগান্তি না হয় এজন্য কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে সাধারণ দিনে ৫০-৬০টি ও ছুটির দিনে দেড় শতাধিক বিআরটিসি বাস থাকবে। যতক্ষণ যাত্রী থাকবে ততক্ষণ বাস থাকবে।

এসএম/আরএডি/জেআইএম