দিনাজপুরের বিরল পৌরসভা ও রাজারামপুর ইউনিয়নের নির্বাচন ফলাফলকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলায় অজ্ঞাতনামা সাড়ে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি।
Advertisement
মামলা দুটির মধ্যে ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হামলার ঘটনায় দেড়’শ জনের বিরুদ্ধে এবং কানাইবাড়ীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হামলার ঘটনায় ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতেই মামলা দুটি দায়ের হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান।
ওসি বলেন, পৃথক দুটি হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত প্রায় সাড়ে পাঁচশ জনকে আসামি করে দুইটি মামলা হয়েছে।
Advertisement
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১২ রাজারামপুর ইউনিয়নে রাত ৮টায় কোনাইবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার পর কিছু লোকজন কাগজপত্র ভুল আছে দাবি করেন। এসময় তারা ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার করেন। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা গেলে তাদের ওপর ইট পাটকেল ছোড়েন।
এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ে পুলিশ। পরে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের গাড়ি ও সরকারি মালামাল ফেরত নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কমপক্ষে আহত হন ১০ জন।
অপরদিকে বিরল পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে বিকেল সাড়ে ৫ টায় ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ সময় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা হট্টগোল শুরু করেন। তারা ইভিএম মেশিন থেকে পাওয়া কপি দেখতে চেয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিতদের কেন্দ্র থেকে বের হতে বাধা দেন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সমর্থকরা ইটপাকেল ছুড়ে গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেয়। এতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ, পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কমপক্ষে ৫ জন আহত হন।
এ বিষয়ে কথা হলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা মামলা করেছেন। মোট দুটি কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার পর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে।
Advertisement
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান বলেন, পৃথক দুটি হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত প্রায় সাড়ে পাঁচশ জনকে আসামি করে দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা এই মামলা দুটি দায়ের করেছেন। একটি মামলা দায়ের হয়েছে দিবাগত রাত ১২টার আগে এবং অপরটি রাত ১২টার পরে।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিন্নাহ আল মামুন জানান, দুটি ঘটনাই নির্বাচন ফলাফলকে কেন্দ্র করে হয়েছে। দুটি ঘটনায় পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা একটি কেন্দ্রের সরকারি মালামাল রক্ষা ও নিজেদের নিরাপত্তায় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছি। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা মামলা দায়ের করেছেন।
এমদাদুল হক মিলন/এফএ/এএসএম