জাতীয়

এটিএম জালিয়াতি : মূল হোতা পিটারসহ ৩ বিদেশি জড়িত

কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় এক বিদেশিসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া পিওটর সিজোফেন মাজুরেক (ছদ্মনাম থমাস পিটার) জানিয়েছে, এটিএম কার্ড জালিয়াতির পরিকল্পনায় একজন লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি, একজন বুলগেরিয়ান এবং একজন ইউক্রেনিয়ান নাগরিক জড়িত ছিলেন। সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের পিওটরের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম। মনিরুল ইসলাম বলেন, ইউক্রেনে জন্মগ্রহণ করলেও পিটার জার্মানির নাগরিক। তিনি অন্যের পাসপোর্ট চুরি করে থমাস থেকে পিওটর নাম ধারণ করে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তিনি গত বছর বিজনেস ভিসায় বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশে আদম ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন পিটার। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দুই বিদেশিসহ আরো একজন প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকের নাম বলেছেন। তবে ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা জানাজানি হওয়ার আগেই তারা দেশ থেকে পালিয়েছে বলে দাবি করেন পিটার। এর আগে রোববার রাজধানীর গুলশানের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় পিটারের কাছ থেকে একটি পাসপোর্ট ও জার্মানির পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। ইউক্রেনে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি জার্মানির নাগরিক। তিনি বাংলাদেশি এক নাগরিককে বিয়ে করেছেন। তার একটি সন্তানও রয়েছে। ডিবি জানায়, পিটার আন্তর্জাতিক অপরাধে জড়িত। তার এই অপরাধ চক্রটি পূর্ব ইউরোপের রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন পোল্যান্ডভিত্তিক অপরাধ চক্রটি এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে তৎপর রয়েছে। রোববার পিটারসহ সিটি ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের তিন কর্মকর্তা মকসেদ আল ওরফে মাকসুদ, রেজাউল করিম ওরফ করিম ওরফে শাহিন ও রেফাজ আহমেদ ওরফে রনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, পিটার এক বছর আগে বাংলাদেশে এসে একটি হোটেলে অবস্থান করে। সেখানেই তার সঙ্গে সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাদের সঙ্গে অন্যান্য কোন ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্যাংক জালিয়াতি করার জন্য আন্তর্জাতিক চক্রটি কেন বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম জানান, ‘অতি লোভের কারণে তারা বাংলাদেশে ব্যাংক জালিয়াতি করেছে। এছাড়াও তারা ভেবেছিল বাংলদেশের টেকনোলজিকাল সাপোর্ট দুর্বল।’ সাধারণত বিদেশিদের নজরদারির দায়িত্ব পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি)। একের পর এক বিদেশিদের অপরাধে জড়িয়ে থাকায় এসবি’র ব্যর্থতা রয়েছে কি না জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, তারা অন্যান্য উন্নত দেশেও একই কাজ করেছেন। যেসব দেশকে ইন্টেলিজেন্স, উৎকর্ষতার দিক থেকে আমরা মডেল মনে করি তাদের দেশেও অপরাধ করে পালিয়ে এসেছে অপরাধীরা।’ উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ ব্যবহার করে কৌশলে টাকা তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে জানা যায়, আরো অন্তত ২১ জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে একইভাবে আনুমানিক ১০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলে ডিবি পুলিশ এর তদন্ত শুরু করে। এআর/জেএইচ/এআরএস/পিআর

Advertisement