আফ্রিকার গাম্বিয়ার পর এবার এশিয়ার উজবেকিস্তান অভিযোগ করেছে, ভারতে তৈরি সর্দি-কাশির সিরাপ খেয়ে দেশটির ১৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) জানিয়েছে, ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডের তৈরি কাশির সিরাপ খেয়ে এখন পর্যন্ত ১৮ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
দেশটির মন্ত্রণালয় বলছে, ২১ থেকে ১৮ জন শিশু যারা তীব্র শ্বাসযন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হয় তারা ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ সেবন করেছিল। সেই ওষুধ সেবন করার পর মৃত্যুর এ ঘটনা। সর্দি ও ফ্লুর উপসর্গের চিকিৎসা হিসেবে কোম্পানির ওয়েবসাইটে এটি বাজারজাত করা হয়।
মঙ্গলবার প্রকাশিত বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, সিরাপটি উজবেকিস্তানে কুরাম্যাক্স মেডিকেল এলএলসির মাধ্যমে আমদানি করা হয়েছিল। এতে আরও জানানো হয়, সিরাপটির একটি ব্যাচে ইথিলিন গ্লাইকল রয়েছে, যা একটি বিষাক্ত পদার্থ।
মন্ত্রণালয় বলছে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বাড়িতে শিশুদের ওই সিরাপ সেবন করতে দেওয়া হয়েছিল, হয় তাদের বাবা-মা বা ফার্মাসিস্টের পরামর্শে। এটি পরিষ্কার নয় যে, সব শিশু স্ট্যান্ডার্ড ডোজের চেয়ে বেশি গ্রহণ করেছে কিনা।
Advertisement
এ ঘটনায় উজবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া বা অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট ৭ জনকে বরখাস্ত করেছে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা উজবেকিস্তানের রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত কিন্তু কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মান নিশ্চিত করতে ভারতের কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সারাদেশে কিছু ওষুধ কারখানা পরিদর্শন করা শুরু করেছে।
২০১২ সালে উজবেকিস্তানে নাম নথিভুক্ত করায় ম্যারিয়ন বায়োটেক। তাদের সরবরাহ করা সর্দি-কাশির সিরাপ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে উজবেকিস্তান সরকার।
Advertisement
এর আগে গাম্বিয়ায় সর্দি-কাশির সিরাপে অস্বাভাবিক মাত্রায় ডাইথিলিন গ্লাইকল এবং এথিলিন গ্লাইকলের উপস্থিতির কারণে কিডনি বিকল হয়ে প্রায় ৭০ জন শিশুর মৃত্যু হয়। তবে সে সময় ভারত সরকার ও কোম্পানিটি এ দায় অস্বীকার করে।
গত অক্টোবরে গাম্বিয়ার ওই ঘটনার অভিযোগ উঠে ভারতীয় সংস্থা মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি চার ধরনের কাশির সিরাপের দিকে। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাধানম গেব্রিয়েসুস সংবাদ সম্মেলন করে ওই সংস্থার তৈরি সর্দি-কাশির সিরাপ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেন।
ভারত ‘বিশ্বের ফার্মাসি’ হিসাবে পরিচিত। দেশটির ওষুধ রপ্তানি গত এক দশকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। গত অর্থবছরে ২৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে শুধু ওষুধ রপ্তানি করেই।
সূত্র: আল-জাজিরা, এনডিটিভি
এসএনআর/এএসএম