ফিচার

বিশ্বের দীর্ঘতম ১০ মেট্রোরেল যেসব দেশের

যানজট নিরসনে এবং রাজধানী ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করতে আজ ২৮ ডিসেম্বর চালু হলো বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার চলাচল করবে মেট্রোরেল। প্রথম অবস্থায় উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেলটির ১১.৭৩ কিলোমিটারের যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

Advertisement

পিলারের মাধ্যমে মাটির উপরে নির্মাণ করা হয়েছে এই মেট্রোরেল, যাকে বলা হয় ওভারগ্রাউন্ড এলিভ্যাটেড এক্সপ্রেস। এছাড়া অনেক শহরে মাটির নিচ দিয়েও মেট্রোরেল চলাচল করে, যা আন্ডারগ্রাউন্ড, সাবওয়ে বা টিউব নামে পরিচিত। তবে দেশের প্রথম মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২০.১ কিলোমিটার হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে শত শত কিলোমিটার চলাচল করার মেট্রোরেল।

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ মেট্রোরেলের তালিকায় চীনের রয়েছে ৪টি মেট্রোরেল। এছাড়াও আছে লন্ডন, নিউ ইয়র্ক সিটি, দক্ষিণ কোরিয়ার মেট্রোরেল। চলুন জেনে নেওয়া যাক বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম ১০ মেট্রোরেল আছে কোন কোন দেশে-

সিউল সাবওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়াতালিকার শুরুতেই আছে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল সাবওয়ে। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম পাতাল রেল ব্যবস্থা।১৯৭৪ সালে প্রথম এই সাবওয়েটি খুলে দেওয়া হয়। এর বর্তমান দৈর্ঘ্য ৯৪০ কিলোমিটার। এই সাবওয়ে সিস্টেমটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিউল মেট্রো, সিউল মেট্রোপলিটন র্যাপিড ট্রানজিট কর্পোরেশন, কোরাইল, ইনচিওন ট্রানজিট কর্পোরেশন এবং অন্যান্য বেসরকারী দ্রুত ট্রানজিট অপারেটর সহ একাধিক অপারেটর দ্বারা পরিচালিত হয়।

Advertisement

সাংহাই মেট্রো২য় অবস্থানেই আছে চীনের সাংহাই মেট্রো। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম মেট্রোরেল সাংহাইয়ে অবস্থিত। এই মেট্রোর দৈর্ঘ্য ৪৬৮ কিলোমিটার। পৃথিবীর অন্যতম ব্যস্ত এই মেট্রোরেলে ৫০৮টি স্টেশন আছে। বছরে প্রায় তিন হাজার ৭০০ কোটি যাত্রী এই মেট্রো ব্যবহার করেন। ১৯৯৩ সালে এই মেট্রো নির্মাণ করা হয়। খুব শিগগির এই মেট্রোরেল বৃদ্ধি করে করা হবে ৪৭৭ কিলোমিটার।

বেইজিং সাবওয়ে, চীনপৃথিবীর ৩য় দীর্ঘতম মেট্রোরেলের তালিকায় আছে চীনের আরেকটি মেট্রো লাইন, বেইজিং মেট্রো। মাটির নিচ দিয়ে চলাচল করা ৭৮৩ কিলোমিটারের এই সাবওয়ের স্টেশন সংখ্যা ৪৬৩টি। পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো এই সাবওয়েটি ১৯৭১ সালে উদ্বোধন করা হয়। চীনে এই সাবওয়েটি ‘আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রাগন’ নামেও পরিচিত।

লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড, লন্ডনশহরের বাসিন্দাদের যাতায়াত সহজ করার লক্ষ্য নিয়ে লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড পৃথিবীর প্রথম মাটির নিচে নির্মিত মেট্রো। ১৮৯০ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। দৈর্ঘ্যের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ৪০২ কিলোমিটারের এই মেট্রো স্থানীয়ভাবে ‘টিউব’ নামে পরিচিত। ২৭০টি স্টেশনের এই মেট্রোতে দৈনিক ৫০ লাখেরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করে।

গুয়াংঝো মেট্রো, চীনদীর্ঘতম মেট্রোরেলের তালিকায় ৫ম স্থানে আছে চীনের আরেক মেট্রোরেল, গুয়াংঝাো। ৬০৭.৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই মেট্রো ১৯৯৭ সালে জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ২৯৪টি স্টেশনের এই মেট্রোতে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি মানুষ যাতায়াত করে থাকে।

Advertisement

নিউ ইয়র্ক সিটি সাবওয়ে, নিউ ইয়র্কনিউ ইয়র্ক সাবওয়ে দীর্ঘতম মেট্রোলাইনের দিক থেকে ৬ষ্ঠ অবস্থানে আছে। ৩৯৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সাবওয়েটিতে ১৯০৪ সালে চালু হয়। এতে ৪৭২টি স্টেশন আছে। ১১৮ বছরের পুরোনো সাবওয়েটি প্রতিদিন ৫০ লাখেরও বেশি যাত্রী ব্যবহার করেন।

মস্কো মেট্রো, রাশিয়ারাশিয়ার মস্কো মেট্রো আছে বিশ্বের দীর্ঘতম মেট্রোরেলের তালিকায় ৭ম স্থানে। ৩৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেট্রোর বর্তমানে স্টেশন সংখ্যা ২২৩টি। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই মেট্রো ১৯৩৫ সালে চালু হয়। এই মেট্রোর ‘পার্ক পোবেডি’ স্টেশনটি মাটির ৮৪ মিটার গভীরে অবস্থিত, যা পৃথিবীর তৃতীয় গভীরতম স্টেশন।

উহান মেট্রো, চীনএর পরের অবস্থানেই আছে চীনের উহান মেট্রো। চীনের উহান শহরের নাম এখন বিশ্বের সবার কাছেই পরিচিত। এই উহান শহরেই আছে ৩৩৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রো। ২০০৪ সালে স্টেশনটির উদ্বোধন হয় মেট্রোরেলটি, যার ২২৮টি স্টেশন আছে। এলিভ্যাটেড ও আন্ডারগ্রাউন্ড দুইভাবেই এটি পরিচালিত হয়।

সোল মেট্রোপলিটন সাবওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়াদক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে অবস্থিত সোলে মেট্রোপলিটন সাবওয়ে দীর্ঘতম মেট্রোর তালিকায় ৯ম অবস্থানে রয়েছে। ৩১৯.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সাবওয়ে ১৯৭৪ সালে চালু হয়। এর স্টেশন সংখ্যা ২৯৩টি।

টোকিও সাবওয়ে, জাপানটোকিও পাতাল রেল ব্যবস্থা বিশ্বের দীর্ঘতম পাতাল রেল ব্যবস্থার মধ্যে অন্যতম। জাপানের মেট্রো ও পাতাল রেল ব্যবস্থা বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেছে অনেক আগেই। ঝাঁ চকচকে এবং শান্ত মানুষের এই দেশের টোকিও সাবওয়ে আছে বিশ্বের প্রথম ১০ মেট্রোরেলের তালিকায়। এর দৈর্ঘ্য ৩১০ কিলোমিটার। ১৮৪টি স্টেশনের এই মেট্রো ১৯২৭ সালে চালু হয়। বছরে প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ এই মেট্রো ব্যবহার করে থাকে।

সূত্র: রেলওয়ে টেকনোলজি

কেএসকে/জেআইএম