যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যে প্রযুক্তি যুদ্ধ চলছে তা কেবল শুরু মাত্র। চলতি বছরের ৭ অক্টোবর চীনবিরোধী মারাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা সাম্প্রতিক বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম। মার্কিন ওই পদক্ষেপের ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থেকে বঞ্চিত হবে চীন, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। জানা গেছে, মার্কিন কোনো কোম্পানি এই সম্পর্কিত কোনো চিপ চীনে রপ্তানি করতে পারবে না। তাছাড়া এই সম্পর্কিত সফটওয়্যার বা যেকোনো সরঞ্জাম নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে।
Advertisement
চীনের প্রযুক্তিখাতে আগে থেকেই বিনিয়োগ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই ধরনের বিনিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে জো বাইডেনের প্রশাসন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট টিকটক। একটি চীনা কোম্পানি এটির নিয়ন্ত্রণ করে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালে টিকটকের মতো আরও অনেক মাধ্যম বন্ধ করে দিতে পারে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
চীনের কোম্পানিগুলোর ওপর শাস্তিমূলক নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে মার্কিন রাজনীতিবিদরা। মূলত এই প্রক্রিয়া শুরু হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় থেকে। সে সময় ট্রাম্প চীনের টেলিকম সরঞ্জাম নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান জেডটিইকে কার্যত ধ্বংস করে দেন। একই সঙ্গে হুয়াওয়ের মতো কোম্পানিরও প্রায় একই পরিণতি হয়। ২০১৯ সাল থেকে কোম্পানিটি টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে।
এদিকে জো বাইডেন চীনের কোম্পানিগুলোর ওপর থেকে বিধিনিষেধ না উঠিয়ে বরং তার সঙ্গে আরও যোগ করেছেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে চীনের বাকি কোম্পানিগুলোর ওপর বিধিনিষেধ সম্প্রসারণ কার হবে কি না। বলা হচ্ছে, চীনের কয়েকডজন প্রযুক্তি কোম্পানি নজরদারিতে রয়েছে, যাদের অধিকাংশই রাষ্ট্রীয়।
Advertisement
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনৈতিক দেশ দুইটির মধ্যে বিভাজন আরও ত্বরান্বিত হবে। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞার আরোপের পাশাপাশি আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রযুক্তিখাতে চীনের উচ্চবিলাসিতাকে থামিয়ে দেওয়া। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে যদি উত্তেজনা আরও বাড়ে তাহলে এই খাতে আরও কঠিন পদক্ষেপ আসতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে চীন ভোক্তা ইন্টারনেট সার্ভিসের পরিবর্তে প্রযুক্তিতে আরও গভীর মনোযোগ দেবে। আত্ম-নির্ভরশীল হওয়ার জন্য তৈরি করবে সেমিকন্ডাক্টর বা এআই। সেপ্টেম্বরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একটি রাজনৈতিক বৈঠকে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। এজন্য ব্যাপক পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে চীনের সরকার, যার মধ্যে অন্যতম হলো ভর্তুকি।
এমএসএম/জেআইএম
Advertisement