স্বল্প খরচ আর পরিশ্রম কম হলেও সরিষায় লাভ বেশি পাওয়া যায়। তাই সরিষা চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবের কৃষকরা। প্রতিবছরই বাড়ছে আবাদ।
Advertisement
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষা আবাদ হয়েছে। গত অর্থবছরে চাষ হয়েছিল দুই হাজার ২৫০ হেক্টর জমি। চলতি বছরে আবাদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৫০৫ হেক্টর।
সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী তিন বছরের মধ্যে ৪০ শতাংশ ভোজ্যতেল আমদানি কমিয়ে আনবে। সেই লক্ষ্যে সারাদেশের মতো ভৈরবেও কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।
কৃষকরা জানান, বীজ বোনার সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে সরিষার ফলন ঘরে তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ ইউরিয়া ছাড়া আর কোনো সারের প্রয়োজন পড়ে না। চারা গজানোর পর আর কোন পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ পড়ে ৪-৫ হাজার টাকা।
Advertisement
গজারিয়ার গ্রামের কৃষক মাহবুব মিয়া বলেন, ‘প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার ফলন হয় ৬-৭ মণ। বিক্রি করা যায় কমপক্ষে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে ১৪-১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। অল্প সময়ে স্বল্প খরচে সরিষা চাষ করা যায় বলে কৃষকরা বেশ আগ্রহী হচ্ছে।’
জগন্নাথপুর কান্দাহাটির কৃষক খোকন মিয়া বলেন, ‘সরিষায় খরচ কম। কম সময়ের মধ্য ফসল তোলা যায়। বর্ষা শেষে বোরো ধান আবাদের আগে জমি পতিত না রেখে বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে থাকি। সরিষা চাষে জমিতে বল তৈরি হয়। এটি বোরো ধান আবাদে খুব সহায়ক হিসেবে কাজে দেয়। গতবারের চেয়ে এবছর সরিষায় লাভ বেশি হবে।’
আরেক কৃষক শাহ আলম বলেন, ‘এ বছর ১০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করতে খরচ পড়ে ৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ছয় মণ সরিষা পেয়ে থাকি। এ সরিষা বাজার দরে ২৪-২৫ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারি। ১৫-২০ দিন পর নতুন ফসল ঘরে তুলতে পারবো।’
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, বর্ষার পর কৃষকরা বোরো আবাদের আগে মধ্যবর্তী একটি লাভজনক ফসল হিসেবে সরিষার চাষ করা হয়। সরিষা চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষি বিভাগ নানাভাবে সহযোগিতা করছে। দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষকদের বীজ-সার প্রণোদনার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাড়তি ফসল হিসাবে সরিষা চাষ প্রতি বছরই বাড়ছে এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।
Advertisement
এসজে/জেআইএম