ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় গত বছরের মতো এবারও আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। ফলন কম আর কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে আগাম জাতের আলুতে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না চাষিরা।
Advertisement
এদিকে, উপজেলায় কোনো হিমাগার না থাকায় বাধ্য হয়ে ক্ষেত থেকে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে অনেক চাষিই আলু সংরক্ষণ করতেন বলে জানান।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে শ্রমিকদের নিয়ে গ্রানুলা জাতের আলু তুলছিলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের চাষি ইসমাইল হোসেন। জানান, ৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন তিনি। এক বিঘা জমিতে তার ৬০ কেজি ওজনের ৪০ বস্তা আলু হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী, এই আলুর দাম ২১ হাজার ৬০০ টাকা। অথচ ৪০ বস্তা আলু উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার টাকা। প্রতি কেজিতে আলু উৎপাদন খরচ প্রায় ১২ টাকা।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় গ্রানুলা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলু আবাদ হয়েছে। তিন ধরনের আলুতে বীজের মূল্য এবং পরিচর্যা অনুযায়ী উৎপাদন খরচের বেশ তারতম্য রয়েছে। গ্রানুলা আলুতে প্রতি বিঘায় চাষাবাদে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলুতে ৩৫ থেকে ৩৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
Advertisement
আলু চাষি আবুল কাশেম জানান, চলতি মৌসুমে তিনি চার বিঘা জমিতে সেভেন ও গ্রানুলা জাতের আলু আবাদ করেছেন। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী, প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ১২ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে তাকে।
জেলার নারগুন, রায়পুর, চাড়োল, দুওসুও ও বড়বাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের চাষির কাছ থেকে আলু কিনছেন ব্যবসায়ী দুলাল চৌধুরী। তিনি জানান, রোববার গ্রানুলা জাতের আলু ৯ টাকা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলু ১২ টাকা কেজিদরে কেনা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে আলুর দাম প্রতি কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা কমেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা গতবারের তুলনায় প্রায় ৫০০ হেক্টর কম।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, বালিয়াডাঙ্গীতে তুলনামূলক আলুর চাষাবাদ বেশি হয়। তবে সেখানে হিমাগার না থাকায় কৃষকরা ভরা মৌসুমে কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকদের এ সমস্যা আমরা চিহ্নিত করেছি। সমস্যাটি থেকে উত্তরণের জন্য আলু সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Advertisement
তানভীর হাসান তানু/এমআরআর/জেআইএম