দেশজুড়ে

প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে তিন বছরে ৫ বিয়ে, খুইয়েছেন ১৫ লাখ টাকা

অনিল চন্দ্র রায় নামের ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধ তিন বছরে পাঁচ বিয়ে করেছেন। তবে বিয়ের পরদিনই কাপড়, গহনা ও অর্থ নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে পাঁচ নববধূই। এভাবে প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে ১৫ লাখ টাকা খুইয়েছেন ওই বৃদ্ধ।

Advertisement

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের কোর্টপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে অনিল বলেন, পাঁচ বছর আগে আমার প্রথম স্ত্রী মারা যায়। স্ত্রীর মৃত্যুতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। এ সুযোগে এলাকার প্রতারক চক্রের সদস্য বাবুল, সবুজ, আ. লতিফ, কালিপদ, রমজান আলী ও হব্বু আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে দিনাজপুরের খানসামা ঠাকুরগাঁওয়ের গড়েয়া, মাড়েয়া ও জলঢাকার মীরগঞ্জ এলাকায় নিয়ে মেয়ে দেখাতেন। মেয়ে দেখিয়ে কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বিয়ে দিতেন। নববধূদের বাড়িতে নিয়ে আনার পরদিন সকালেই টাকা-ডয়সা, কাপড় ও সোনাদানা নিয়ে প্রতারক চক্রদের সহযোগিতায় পালিয়ে যায়।

ষাটোর্ধ বৃদ্ধ আরও বলেন, পালিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর প্রতারক চক্রের সদস্য বাবুল, আ. লতিফ ফোন করে টাকা দাবি করতেন। এছাড়া আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা। এখনো পালিয়ে যাওয়া নারীদের সঙ্গে বিচ্ছেদের কথা বলে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে টাকা দাবি করে আসছেন তারা।

Advertisement

অনিল বলেন, সবশেষ ঠাকুরগাঁও জেলার এক নারীকে এনে আমার কাছে ছয় লাখ টাকা দাবি করেন বাবুল ও তার সহযোগীরা। টাকা দিতে না চাইলে র‌্যাব ও পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারের পাশাপাশি আদালতে মামলা দেওয়ার ভয়ভীতি দেখান। আমি ওই চক্রের কবল থেকে রক্ষা পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে সহযোগিতা চাই।

অভিযুক্ত বাবুল হোসেন বলেন, ‘আমি একটি বিয়ে দিয়েছি সত্য। তবে টাকা পয়সার বিষয়ে জানি না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা।’ তবে অভিযুক্ত অন্যদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হরিণচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এলাকার একটি প্রতারক চক্র নানাভাবে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। অনিল চন্দ্র রায় খুব সহজ সরল মানুষ। তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর প্রতারক চক্রটি তাকে ফুঁসলিয়ে ফাঁদে ফেলে তিন বছরে পাঁচটি বিয়ে দেয় বলে শুনেছি। চক্রটির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।

ডোমার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

এসজে/জেআইএম