প্রত্যেক দিন সকালে অসংখ্য যানবাহন প্রবেশ করছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। এর যাত্রীরা নতুন জীবনের আশায় শহরটিতে আসছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দিনে দুই হাজার অভিবাসী ঢাকায় পৌঁছায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা ঢাকা আসছে। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ফলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
Advertisement
২০২৩ সালে এই চিত্র আরও বেশি দেখা যাবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে। সাব-সাহারান আফ্রিকা, পূর্ব এশিয়া, প্যাসিফিক অঞ্চল ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। বৈরি আবহাওয়ার কারণে অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে বা বেশি দৃশ্যমান হবে। বাড়ি-ঘর ছাড়তে বাধ্য হবে মানুষ। যেমনটা দেখা গেছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর ও আগস্টে পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যার ক্ষেত্রে। এই বন্যায় ৩৩ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়।
প্রাকৃতিক জলবায়ু ব্যবস্থা, যা লা নিনা নামে পরিচিত। এটি বিশ্বে বৃষ্টিপাতের ধরণকে প্রভাবিত করছে। দরিদ্র দেশগুলোতে পরিস্থিতি বিধ্বংসী হয়ে উঠছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ধীরে ধীরে পড়ে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শস্যের উৎপাদনে, সমুদ্রের পানিতে প্লাবিত হয় গ্রাম। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব বহুমুখী। দরিদ্র বাড়ানোর পাশাপাশি সংঘাত সৃষ্টিতেও রয়েছে এর অবদান। বিশ্ব ব্যাংক এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে সাব-সাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় ১৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে এই জলাবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ফলে।
Advertisement
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব বাস্তুচ্যুতদের তিন-চতুর্থাংশ নিজে দেশের সীমানার মধ্যে অবস্থান করবে। সরকারগুলো ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ ফান্ডিং বাড়ানোর দাবি জোরালো করবে। অধিক কার্বন নিঃসরণের জন্য ধনীদেশগুলো এই ফান্ড দিয়ে থাকে। আগামী বছর ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ হবে আলোচিত ইস্যু।
অন্যদিকে যেসব দেশে বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা অধিক তারা এই বিষয়ে কাজ শুরু করবে। ঢাকায় যারা আসছে তাদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। অন্যত্র চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, বাড়ানো হচ্ছে এ সম্পর্কিত অবকাঠামো। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে মংলা বন্দর। সেখানে বিনিয়োগ বাড়ানোর ফলে গত দশকে জনসংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। একই ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইথিওপিয়া ও ঘানা।
এমএসএম/এএসএম
Advertisement