গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়া ছেলেকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
Advertisement
কমিশন বলছে, প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার পরও একজন বন্দিকে মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে নিয়ে যাওয়া কেবল অমানবিকই নয়, এটা বাংলাদেশের সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থি।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) কমিশনের উপ-পরিচালক ফারহানা সাঈদ সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আলী আজমের মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে গত ১৮ ডিসেম্বর মারা যান। শেষবার মায়ের মরদেহ দেখতে ও জানাজায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেতে আইনজীবীর মাধ্যমে ১৯ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম। ২০ ডিসেম্বর তিন ঘণ্টার জন্য তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। তিনি তার মায়ের জানাজায় উপস্থিত থাকার সুযোগ পান। প্যারোলের পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পর অবস্থায় ছিলেন তিনি।
Advertisement
আরও পড়ুন: ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজায় বিএনপি নেতা, যা বলছে কর্তৃপক্ষ
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জানাজা পড়ানোর সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও তা খুলে দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। কমিশন মনে করে, ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনপূর্বক প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার পরও একজন বন্দিকে মায়ের জানাজায় ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে নিয়ে যাওয়া কেবল অমানবিকই নয় বরং বাংলাদেশের সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থি। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার বা দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানসিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না।
কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাশাপাশি কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ডান্ডাবেড়ি পরানো বিষয়ক উচ্চ আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে, সেটা এক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়নি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েনসহ যথাযথ নজরদারিসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া সমীচীন ছিল। কিন্তু মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জানাজায় অংশগ্রহণ অত্যন্ত অমানবিক।
আরও পড়ুন: ডান্ডাবেড়ি-হাতকড়া নিয়েই মায়ের জানাজা পড়ালেন বিএনপি নেতা
Advertisement
এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণে যত্নবান হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দিচ্ছে কমিশন।
এসএম/এএএইচ/জেআইএম