বৈশ্বিক করোনা মহামারি ও অর্থনৈতিক মন্দায় সাধারণ মানুষ যখন জীবন-জীবিকা নিয়ে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন, তখন দেশের বিভিন্ন শহরের নামি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন ও নীতিমালা উপেক্ষা করে নামে-বেনামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিবাণিজ্য বন্ধে প্রশাসনের জোর পদক্ষেপ দাবি জানিয়েছে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতারা।
Advertisement
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান ক্যাব নেতারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভর্তি ও পুনঃভর্তির নামে শির্ক্ষাথীদের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে উন্নয়ন ফি, ডিজিটাল ফি, টিসি গ্রহণের সময় পুরো বছরের ফি আদায়, নতুন সেশনে ভর্তির ইত্যাদির নামে-বেনামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম বন্দর, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বেপজাসহ বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত স্কুলেও নানা অযুহাতে ভর্তি, পুনঃভর্তি এবং টিউশন ফি দ্বিগুন করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভর্তিবাণিজ্য বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতারা।
নেতৃদ্বয় বলেন, ডিসেম্বর থেকে নগরীতে শুরু হয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তিবাণিজ্য। সরকারি ও নামি স্কুলে ভর্তির জন্য কোচিং বাণিজ্য, ভর্তির সময় ডোনেশন, বিভিন্ন ফি আদায় করে মধ্যবিত্তসহ সব নাগরিকদের মধ্যে শিক্ষা অধিকারের পরিবর্তে একটি অতি খরচ নির্ভর পণ্যে পরিণত হয়েছে। একজন সাধারণ নাগরিককে ভর্তি, পুনঃভর্তি, টিউশন ফি, বই-খাতা ইত্যাদির নামে এত খরচের বোঝা চাপানো হচ্ছে, যার ভারে মধ্যবিত্তের জীবন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ যেন নিত্যসঙ্গী।
Advertisement
নেতৃদ্বয় অভিযোগ করেন— ভর্তি, পুনঃভর্তি, টিউশন ফি ও টিসির ফি আদায়ের কোনো নিয়মনীতি মেনে চলার নজির পাওয়া যাচ্ছে না, যে যার মতো করে অর্থ আদায় করে পকেট ভর্তি করছে। সরকারের শিক্ষামন্ত্রণালয়ের জারি করা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শির্ক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় নীতিমালা উপেক্ষা করে যে যার মতো ফি আদায় করছে।
ক্যাব নেতারা ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, বৈশ্বিক করোনার প্রভাবে বিগত দুই বছর এ ধরনের ভর্তি ফি আদায় বন্ধ থাকলেও বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় যেখানে মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে ভর্তি ও পুনঃভর্তির নামে ফি আদায় ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসাবে দেখা দিয়েছে। এসব অনিয়ম বন্ধে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি করা হলেও তারাও কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে শিক্ষামন্ত্রণালেয়র প্রজ্ঞাপনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছেন। যা খুবই দুঃখজনক।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের বাণিজ্য বন্ধে অনতিবিলম্বে প্রশাসনের পদক্ষেপ দাবি করেছেন নেতারা।
ইকবাল হোসেন/এমএএইচ/জেআইএম
Advertisement