যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্যের বাসা ভাড়া নিয়ে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকার অডিট আপত্তি দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত ও ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটে এ অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ হিসেবে সাড়ে পাঁচ বছরে আর্থিক অনিয়মের পরিমাণ ৪০ লাখেরও বেশি।
Advertisement
অভিযোগ উঠেছে, উপাচার্য এয়ারমার্ক বাংলোয় বসবাস করেও প্রতিমাসে বাড়িভাড়া ও আনুষঙ্গিক বাবদ ৬১ হাজার ৯৯৪ টাকা উত্তোলন করেন। এর বিপরীতে বাংলোয় অবস্থান করা বাবদ প্রতিদিন ১২৫ টাকা হারে পরিশোধ করেন।
২০১৭ সালের ২০ মে প্রথম মেয়াদে চার বছর এবং ২০২১ সালের ১ জুন পরবর্তী মেয়াদে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারীসহ এয়ারমার্ক বাংলো রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, যবিপ্রবিতে যোগদান করার পর ফিন্যান্স কমিটি ও রিজেন্ট বোর্ডের ক্ষমতা ব্যবহার করে ফাইল নোটের মাধ্যমে বাড়িভাড়া বাবদ ৬০ হাজার টাকাসহ গ্যাস বিল, গ্যারেজভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি বাবদ মোট ৬১ হাজার ৯৯৪ টাকা গ্রহণ করছেন উপাচার্য। অথচ উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এয়ারমার্ক বাংলোয় বসবাস করেন। এজন্য তিনি দিনপ্রতি ১২৫ টাকা হিসেবে পরিশোধ করে থাকেন।
Advertisement
সূত্র জানায়, বিষয়টি নজরের আসায় অডিট আপত্তি দিয়েছে ইউজিসি। ইউজিসির বাজেট পরীক্ষক দল তাদের প্রতিবেদনে ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত ও ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেট পরীক্ষাকালীন এ অনিয়ম তুলে ধরেছে।
প্রতিবেদনের ৮ নম্বর ক্রমিকে আপত্তির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘উপাচার্য মহোদয়ের এয়ারমার্ক বাংলো থাকা সত্ত্বেও ঢাকাস্থ বাসার ভাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে পরিশোধ’। এক্ষেত্রে বার্ষিক আর্থিক সংশ্লেষণ ৭.৩২ লাখ টাকা। শেষে বলা হয়েছে, ‘উপাচার্য মহোদয়কে ঢাকাস্থ বাসার ভাড়া বাবদ প্রদত্ত আর্থিক সুবিধা বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা হলো’।
সূত্র আরও জানায়, এক বছরে উপাচার্যের বাসাভাড়া খাতে ৭.৩২ লাখ টাকা হিসেবে সাড়ে পাঁচ বছরে এই খাতে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে ৪০ লাখেরও বেশি। শুধু উপাচার্যের বাসাভাড়াই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে বসবাসরতদের ক্ষেত্রেও একই অনিয়ম করা হয়েছে। আবাসিক ভবনে বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সরকারি ভাড়া উত্তোলন করে নামমাত্র ভাড়া পরিশোধ করেন। এক্ষেত্রেও ওই অডিট রিপোর্টে বার্ষিক ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার অডিট আপত্তি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হিসাব) জাকির হোসেন অডিট আপত্তির বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তিনি কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
Advertisement
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন জানান, ইউজিসির অডিট আপত্তির বিষয়ে লিখিতভাবে জবাব দেওয়া হয়েছে। এরপর তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটিই চূড়ান্ত হবে।
মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম