ঢাকাই চলচ্চিত্র আর শাবনূর যেন একটি অবিচ্ছেদ্য নাম। বাংলাদেশের যে কয়জন নায়িকা চলচ্চিত্রকে তুমুল জনপ্রিয় করতে অবদান রেখেছেন তার মধ্যে শাবনূর অন্যতম। সিনেমাপ্রেমীরা তার অভিনয় দীর্ঘদিন মনে রাখবেন।
Advertisement
দেশীয় চলচ্চিত্রের এই নায়িকার ঠোঁটে যেসব শিল্পীদের গান সিনেমার পর্দায় চিত্রায়িত হয়েছে তার মধ্যে শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা সবার শীর্ষে রয়েছেন। তাই নন্দিত নায়িকা শাবনূরের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে কনকচাঁপা একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস লিখেছেন।
কনকচাঁপা তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, শাবনূর, একটি পরিপূর্ণ প্রতিভাময়ী শিল্পীর নাম যাকে বাংলাদেশ কখনোই ভুলতে পারবে না! তার অভিনয় শৈলী, তার উচ্চারণ, তার দৈহিক সৌন্দর্য, তার চাঁদপানা মুখশ্রী গোলাপের মতো হাসি এবং তার নয়নযুগল পুরো যুবসম্প্রদায়কে বুঁদ করে রেখেছে কয়েক যুগ। তার রেশ এখনো কাটেনি, কাটবেও না কখনো। এই ‘শাবনূর’ এপিসোড থেকে দর্শক বেরুতেও চায়নি, চাইবেও না। কারণ এমন প্রতিভার অধিকারী শত জনমে একজনই হয়। তার সমসাময়িক অনেকেই আছেন কিন্তু কাছাকাছি কেউ নেই।
শাবনূরে অভিনয় নিয়ে কনকচাঁপা লিখেছেন, আমি বলা যায় প্রথম থেকেই তার জন্য গাইছি। আশ্চর্যজনক কথা যে তার সঙ্গে আমার খুবই কম দেখা হয়েছে। আমি আমার মতো গেয়েছি তিনি তার মতো অভিনয় করেছেন। কিন্তু যখন পিকচারাইজেশন দেখেছি তখন আমারই বিশ্বাস হয়নি যে এটা আমি গেয়েছি, মনে হয়েছে এটা যেন তারই কণ্ঠ!
Advertisement
কনকচাঁপা শাবনূরকে মহানায়িকা হিসেবে ভূষিত করে তার স্ট্যাটাসে লেখেন, এই যে একাকার হয়ে যাওয়া এই ক্রেডিট আমি শাবনূরকেই দিতে চাই। তিনি আসলে আমাদের কবরীর পরে ভার্সেটাইল যাকে বলে সেই উঁচুমানের মহানায়িকা। সিরিয়াস অভিনয়, হাসির অভিনয়, ছটফটে দুরন্ত কিশোরীর অভিনয় সবই দুর্দান্ত তবে তার ভয়ংকর সুন্দর চোখে যখন অশ্রু ঝরে তখন একটা কথাই মাথায় আসে ‘ফুল নেবো না অশ্রু নেবো ভেবে হই আকুল!’
ব্যক্তিগত স্মৃতির কথা মনে করে কনকচাঁপা লেখেন, আগেই বলেছি ব্যক্তিগত জীবনে তার সঙ্গে আমার খুব কম দেখা হয়েছে। আমার রেকর্ডিং স্টুডিও আর তার কর্মক্ষেত্র আলাদা জায়গায় হওয়াতেই এমন হয়েছে। কিন্তু যখন তাকে দেখেছি, খেয়াল করেছি খুব সহজ সরল তার উপস্থিতি। তার কাঁচভাঙ্গা হাসি আমার মন কেড়ে নিয়েছে। সবারই বোধহয় এভাবে অনুভব হয়। সাধারণভাবে দেখা সাক্ষাৎ হলে মনে হয়েছে এই মেয়ে সিরিয়াস অভিনয় করে কিভাবে! আমার ছেলের বিয়েতে দাওয়াত দিতে গিয়েছিলাম তার বাসায়। তখন তার আন্তরিক আতিথিয়েতা দেখে আমি মুগ্ধ! তখনও আমি নিরাভরণ শাবনূরকে দেখে চমকে উঠেছি তার বিরল সৌন্দর্য ও চোখের চাহনিতে।
শাবনূরের সিনেমায় গান গাইতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করে কনকচাঁপা উল্লেখ করেন, আমি খুবই গর্বিত তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের প্রায় পুরো সময়ই আমি সঙ্গে ছিলাম। তার অভিনীত একশো ভাগের নিরানব্বই ভাগ গানই আমার গাওয়া। আমাদের দুইদেহ এক প্রাণ বলা যায়।
কনকচাঁপা শেষের দিকে লেখেন, জীবনে কখনো কোন চ্যানেলকে বলিনি আমাকে এমন একটা অনুষ্ঠান দেন। কিন্তু কয়েকটি চ্যানেলে স্বপ্রণোদিত হয়ে বলেছি শাবনূর ও আমাকে নিয়ে একটা প্রোগ্রাম সাজাতে, কিন্তু কোন চ্যানেলই গা করে নাই। এই বাংলাদেশে মূল্যায়ন পাওয়া খুবই কঠিন তবে আমার বিশ্বাস একদিন আমার গান আর শাবনূরের অভিনয়ের সমন্বয় নিয়ে গবেষণা হবে তখন হয়তো তা দেখার জন্য হয়তো কোনো একজন থাকবো না। আমি আমাদের এই মহানায়িকার আনন্দিত সুখী সুদীর্ঘ জীবন কামনা করছি। শাবনূরের জন্মদিন উপলক্ষে আমার পক্ষ থেকে রইলো অগণন শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
Advertisement
এমআই/এমএমএফ/এমএস