ফিচার

মুক্তিযুদ্ধে চা-শ্রমিকরা যেভাবে অবদান রাখেন

রফিকুল ইসলাম জসিম

Advertisement

মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের জাতীয় বীর। তাদের চরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা একাত্তরে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মানুষগুলো, স্বাধীনতাকামী জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে।

নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে শহীদ হয়েছে ৩০ লাখ মানুষ, ৩ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম লুণ্ঠিত হয়েছে। যুদ্ধের ভয়াবহতা বহন করে চলেছে আজও অগণিত মানুষ। মুক্তিযুদ্ধে চা-শ্রমিকদের অবদানও কম নয়।

বাঙালির অবিস্মরণীয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের বীর বাঙালিদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে চা শ্রমিকরাও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।

Advertisement

এই যুদ্ধে চা শ্রমিকদের অনেক বধ্যভূমি রচিত হয়, লুণ্ঠিত হয় অনেক মা-বোনের ইজ্জত। অনেক চা-শ্রমিকেরা সম্মুখ যোদ্ধে অংশ নিয়ে অনেকেই জীবন উৎসর্গ করেছিলেন আমাদের মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করার জন্য।

চা বাগানে গণহত্যা

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পাকসেনারা কামান, মেশিন গান, ট্যাংকসহ ভারী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ঘুমন্ত চা শ্রমিকদের উপর বরবর হামলা চালায় পাক বাহিনী। যুদ্ধের সময় শত শত নিরস্ত্র চা শ্রমিকদের হত্যা করেছিল পাক সেনারা। তাদের গুলার আগুনে অনেক চা শ্রমিকের ঘর বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। মায়ের কোলের ছোট্ট শিশু থেকে আবাল বৃদ্ধা বনীতা কেউই সেদিন রা পায়নি পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে। যা গণহত্যা নামে পরিচিত।

স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে চা শ্রমিক ও বাগানের কর্মচারিদের এমন সম্পৃক্ততা মোটেও ভালো চোখে নেয়নি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। চা বাগানগুলো ছিল সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে। এ কারণে পাকিস্তানিদের বিশেষ নজর ছিল এসব এলাকায়।

Advertisement

তাই কখনো মুক্তিযোদ্ধা খোঁজার নাম করে, কখনো রেশন কার্ড দেবে বলে, কখনো কিছু না বলেই একাত্তরের সেই ৯ মাসের যুদ্ধের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বাগানে পাকিস্তানি সেনারা চালায় ভয়ংকর গণহত্যা। বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন চা বাগানে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সদস্যরা নৃশংস গণহত্যা চালায়।

ভাড়াউড়া চা বাগান, দেওরাছড়া চা বাগান, রাজঘাট চা বাগান, কালিঘাট চা বাগান, সুরমা চা বাগান, তেলিয়াপাড়া চা বাগান প্রভৃতি চা বাগানগুলোতে ইতিহাসের নারকীয় গণহত্যার নীরবসাক্ষী হয়ে রয়েছে।

১৯৭১’ শীর্ষক অপূর্ব শর্মার গবেষণা গ্রন্থে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের ৬৬টি চা বাগানে ৫৪৫ জনকে হত্যা করা হয়। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন বাগানের শ্রমিক। তবে নিহতদের মধ্যে কয়েকজন কর্মী ও মালিকও ছিলেন।

গবেষক-লেখক দীপংকর মোহান্তের ‘মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের চা-শ্রমিক’ বইতে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫৮৮ জন চা বাগানের শহীদদের তালিকা করা হয়েছে।

চা শ্রমিকরা বেশিরভাগই অমুসলিম ও আওয়ামী লীগের সমর্থক হওয়ায়, তাদের প্রতি পাক বাহিনীর তীব্র ক্ষোভ ছিল বলে অপূর্ব শর্মা তার বইতে উল্লেখ করেছেন।

চা বাগানের মুক্তিযোদ্ধা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, এরপর থেকেই দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়েছেন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছিল অনেক চা শ্রমিক মানুষ।

গবেষক দীপংকর মোহান্তের বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ২৯৬ জন চা বাগান কর্মীকে সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে চা বাগানের অন্তত আরও ১৪৫ জন দেশের জন্য লড়াই করেও কোনো স্বীকৃতি পাননি। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা।

শহীদ গুরনা ভর

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই চা-বাগানের শ্রমিক গুরনা ভর। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন সংবাদদাতা ও গাইড এর ভূমিকা পালন করেছিলেন অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে।

ধলাই বাগানের পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্প ধ্বংসের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা বারবার আক্রমণ করেও ব্যর্থ হন। টিলার গা ঘেঁষে তৈরি করা বাংকারের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যেত না।

চা-শ্রমিক গুরনা ভর জীবনবাজি রেখে ধলাই বাগানে প্রবেশ করেন। যুদ্ধ শুরু হয়। ওই যুদ্ধে এক পর্যায়ে বাংকারের অবস্থান নির্দেশের জন্য গুরনা ভর হামাগুড়ি দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে বাংকারের ওপরে উঠে সঙ্কেত দিতে থাকেন।

তবে দূর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা তার সংকেত বুঝতে না পারায় তিনি চিৎকার করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ঠিক তখনই গুলিতে তার বুক ঝাঁঝরা হয়ে যায়। বহু মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের ফলে ধলাই যুদ্ধে পাক বাহিনীর পরাজয় ঘটে।

মুক্তিযোদ্ধা বিনোদ সিং

কমলগঞ্জ উপজেলার দেওরাছড়া চা বাগানের এক শ্রমিক পরিবারের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনোদ সিং পাক হানাদাররা চোখের সামনে যখন তার পিতা শ্রী কৃষ্ণ সিংকে গুলি করে হত্যা করে তখন তার মনে প্রতিশোধের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে।

তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম লিখিয়ে ভারতের লোহারবন্দে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন (নং-৭৩০৬)। প্রশিক্ষণের শেষে মেজর সি আর দত্তের অধীনে ৪নং সেক্টর এলাকায় রাখনা, ফুলতলা, গাজীপুর, কুলাউড়া প্রভৃতি এলাকায় যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা অনুকূল গঞ্জ

কমলগঞ্জ উপজেলার দেওরাছড়া চা বাগানের বধুয়া গঞ্জুর পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা অনুকূলগঞ্জ দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে ২২ বছর বয়সে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

ভারতের লোহারবন্দে প্রশিক্ষণ নিয়ে ক্যাপ্টেন সাজ্জাদুর রহমানের নেতৃত্বে ৪নং সেক্টর এলাকার ধলাই বালিশিরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনি কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা না পেলেও বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমল থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আর্থিক সুবিধা লাভ করেছেন।

মুক্তিযোদ্ধা কুলচন্দ্র তাঁতী

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কমলগঞ্জের মৃতিঙ্গা চা বাগানের শ্রমিক-সন্তান কুলচন্দ্র তাঁতীর বয়স ছিল ১৭। মৃতিঙ্গা চা-বাগানে পাকিস্তানি বাহিনীর তাণ্ডব দেখে তার মনে প্রতিশোধ গ্রহণের স্পৃহা জাগে।

পাক বাহিনী তাদের বাগানের দুজন নারী শ্রমিককে নিপীড়ন করে এবং পরবর্তীকালে দেওয়াড়া চা বাগানে পঞ্চাশ জনেরও বেশি চা-শ্রমিককে হত্যা করে। তার পরপরই তিনি ভারতের কমলপুর ত্রিপুরা শরণার্থী ক্যাম্পে চলে যান।

ওই ক্যাম্পেই তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণের জন্য তালিকাভুক্ত হন এবং লোহারবন্দে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযোদ্ধা কুলচন্দ্র তাঁতীকে জুড়ি-বড়লেখা অঞ্চলে পাঠানো হয়।

চা-শ্রমিক পরিবারের সন্তান হওয়ায় প্রথমত তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ছদ্মবেশে সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন বাগানে প্রবেশ করে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অবস্থান সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া ও তাদের বাঙ্কার ও ক্যাম্পের অবস্থান চিহ্নিত করা ও মাইন পুঁতে রাখা।

একবার বাংকারের খবর নিতে গিয়ে একটি পুলের কাছে ডিউটিরত রাজাকারদের হাতে তিনি ধরা পড়েন, রাজাকাররা তাকে পাকসেনাদের হাতে তুলে দেয়।

তাকে যে বাংকারে রাখা হয় সেই বাঙ্কারে তিনি ৮ জন নারীকে দেখেছেন তার মধ্যে তিনজন ছিলেন বাঙালি ও পাঁচজন মণিপুরী।

তাদের সবাইকে বিবস্ত্র অবস্থায় রাখা হয়েছিল এবং তাদের শারীরিক অবস্থা ছিল শোচনীয়। তখন যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল বলে পাকিস্তানি সেনারা রাতে যাওয়া-আসা করতো বেশি।

একদিন সন্ধ্যায় একজন পাকসেনা তাকে পার্শ্ববর্তী বাজার থেকে কিছু জিনিসপত্র কিনে আনতে পাঠালে তিনি বাজার-সংলগ্ন ধানক্ষেতের মধ্য দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে পালিয়ে যান।

টিলা-জঙ্গল অতিক্রম করে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে পৌঁছান। নভেম্বর মাসের শেষদিকে গাজীপুর চা-বাগানে কয়েকদিন ধরে যুদ্ধ চলে। সেখানকার বাংলোটিতে পাকসেনাদের শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল।

মুক্তিযোদ্ধারা বাংলোটি আক্রমণ করেন মুক্তিযোদ্ধা এম এ মুমিত, এস এ মোহিত ও মোহন লালের নেতৃত্বে। ভারতীয় মিত্রবাহিনী এই অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। অনেক পাকসেনা সেখানে খতম হয়।

চা বাগানের বীরাঙ্গনা

চা বাগানের বীরাঙ্গনাদের ত্যাগ স্বীকারের গল্পগুলো খুঁজে পেতে অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে বলেও বইটিতে উল্লেখ করা হয়। ‘এই ধরনের নির্মম নির্যাতন ও বীরাঙ্গনাদের গল্প অনেকের কাছেই অজানা। কারণ বেশিরভাগ ভুক্তভোগীরা লজ্জায় তা বলতে চান না’, বইটিতে বলা হয়।

এত বীরাঙ্গনার মধ্যে কেবল হবিগঞ্জের চানপুর চা বাগানের হীরামনি সাঁওতাল এবং সাবিত্রী নায়েক ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পান।

তবে সালগী খাড়িয়া, লক্ষ্মী সবর ও মুরতিয়া রবিদাসসহ ২৫ জন বীরাঙ্গনার আত্মদানের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরও কয়েকজন।

বীরাঙ্গনা নারী হলেন- সিন্ধুর খান চা বাগানের মুরতিয়া রবিদাস, শিশেরবাড়ি চা বাগানের যাহালী তাঁতী, ফাঁড়ি কাপাই চা বাগানের সাবিত্রী নায়েক, চান্দপুর চা বাগানের যশোধা নায়েক, সোনারূপা চা বাগানের লক্ষ্মী রানি লামা, মণিপুর চা বাগানের ধনী কর্মকার, জোছনা বেগম, আফেজা বেগম।

খাদিম নগর চা বাগানের রেবতী মাহালী, লক্ষ্মীছড়া চা বাগানের শুভ্রদা বাইরী, ছোটলেখা চা বাগানের যমুনা ভুমিজ প্রমুখ। বীরাঙ্গনা চা শ্রমিক নারীরা মুক্তিসেনাদের দেখাশোনা ও খাবার ও অস্ত্র যোগান দেন।

পাশাপাশি যুদ্ধকালীন গুরুত্বপূর্ণ নানা খবরাখবর মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট পৌঁছানোর দায়িত্ব তিনি পালন করেন। অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে তারা কাজগুলো করেছিলেন।

ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া চা বাগান

১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ম্যানেজার বাংলোয় স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রথম বৈঠক হয়েছিল। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ঊর্ধ্বতন ২৭ সেনা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এ বৈঠকেই দেশকে স্বাধীন করার শপথ ও যুদ্ধের রণকৌশল গ্রহণ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনকে ভাগ করা হয় ১১টি সেক্টর ও ৩টি ব্রিগিডে। এ বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি ওসমানী, তৎকালীন মেজর সিআর দত্ত, মেজর জিয়াউর রহমান, কর্নেল এমএ রব, রব্বানী, ক্যাপ্টেন নাসিম, আব্দুল মতিন, মেজর খালেদ মোশাররফ, কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী, ভারতের ব্রিগেডিয়ার শুভ্র মানিয়ম, এমপিএ মৌলানা আসাদ আলী, লে. সৈয়দ ইব্রাহীম, মেজর কেএম শফিউল্লাহ প্রমুখ।

মহান মুক্তিযোদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে এদেশের আপামর জনতার সঙ্গে চা শ্রমিকরা যে বীরত্বের ও প্রত্যায়ের দৃঢ় মনোবল দেখিয়েছেন তা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে আমাদের সবার মাঝে। মুক্তিযুদ্ধে চা শ্রমিক মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও তাদের গৌরবময় ভূমিকাকে যথাযথভাবে সম্মাননা জানানো হয়।

লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।

তথ্যসূত্র: (চা বাগানে গণহত্যা: ১৯৭১-অপূর্ব শর্মা) ও (মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের চা শ্রমিক-দীপংকর মোহান্তে)

জেএমএস/জেআইএম