দেশজুড়ে

সুযোগ পেলেই যুদ্ধের গল্প শোনান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পবনবেগ গ্রামের শাহ্ এ কে এম হাফিজ উদ্দিন। তিনি একজন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল (তর্জনী) ও বাম কানের লতির উপরের দিকে স্প্লিন্টার দ্বারা প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হন। সেই দিনের ক্ষতচিহ্ন তার স্মৃতিতে আজও দগদগে রয়েছে। সুযোগ পেলেই ছেলে-মেয়েদের সেসব দিনের গল্প শোনান তিনি।

Advertisement

বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম হাফিজ উদ্দিন ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ড অধীন বিহার (ভারত) চাকুলিয়া ট্রেনিংপ্রাপ্ত। ট্রেনিংয়ের সময় তার সততা, সুদক্ষতা ও বীরত্বের জন্য ‘উইং লিডার’ উপাধি পান। যুদ্ধকালীন সময়ে ৮ নম্বরের ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ডেপুটি থানা কমান্ডার পদে বীরত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ডেপুটি সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসাবে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বায়তুল আমান মিলিশিয়া ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজ উদ্দিন তার সঙ্গী মুক্তিবাহিনী নিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ঘোড়াখালী রেলওয়ে ব্রিজ বিধস্ত করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের বিভিন্ন সময় ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও সাব-সেক্টর কমান্ডারদের সঙ্গে বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, মাগুরার মোহাম্মদপুর, কাশিয়ানী থানার ভাটিয়াপাড়ায় যুদ্ধ করেন।

শাহ্ এ কে এম হাফিজ উদ্দিন বলেন, ১৫ আগস্ট ভোর ৪টার দিকে ১০-১২ জন সঙ্গী নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও লোকবল আনার জন্য ভারত অভিমুখে যাত্রা করি। ওই দিন রাত ৯-১০টার মধ্যে যশোরের কালীগঞ্জ থানার বারোবাজার রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় শত্রুরা বোমা ও গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় আমার ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল (তর্জনী) ও বাম কানের লতির উপরের দিকে স্প্লিন্টার দ্বারা প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হই। পরে সঙ্গীরা আমাকে ভারতের কল্যানী ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার আফতাব উদ্দীন আমার চিকিৎসা করেন।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এমন নানা স্মৃতি, যা বলে শেষ করার নয়। এ যুগের ছেলে-মেয়েদের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে জানার আগ্রহ নেই। তারা বন্দী মোবাইল, ইন্টারনেটে। সারাদিন ব্যস্ত মোবাইলে গেমস নিয়ে। আমি সুযোগ পেলেই এলাকার নানা বয়সী মানুষ বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাই। যাতে তারা উপলব্ধি করতে পারে কতটা ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে।

Advertisement

এন কে বি নয়ন/এএইচ/জেআইএম