বাবা-মা এবং সন্তানদের সম্পর্কের মতো পবিত্র ও শ্রেষ্ঠ সম্পর্ক পৃথিবীতে আর নেই। সন্তানরা ভালো না থাকলে যেমনি বাবা-মা দিশেহারা হয়ে যান, তেমনি বাবা-মা ভালো না থাকলে সন্তানরাও ভালো থাকেন না। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীও তার বাবার অসুস্থতায় বেশ বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন। আজ সকালে (১৫ ডিসেম্বর) তার বাবাকে নিয়ে লেখা আবেগঘন স্ট্যাটাসে এমনটাই ফুটে উঠেছে।
Advertisement
স্ট্যাটাসে চঞ্চল চৌধুরী লেখেন, ‘বাড়ির উঠোনেই স্কুল, বাবা সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। যে কারণে স্কুলের মাঠ, গাছপালা, স্কুল ঘর, বইপত্র সব কিছুকেই পৈতৃক সম্পত্তি ভাবতাম। ছোটবেলায় যতটা ভালো ছাত্র ছিলাম, তারচেয়ে অনেক বেশি দুরন্ত ছিলাম। যদিও রোল নম্বর সব সময়ই এক/দুই/তিনের মধ্যেই থাকতো। একজন সৎ এবং স্বনামধন্য শিক্ষক হিসেবে আমার বাবাকে এলাকার সবাই এক নামে চিনতো, এখনো চেনেন। যেকোনো জায়গায় গেলে, বাবার ছেলে হিসেবেই বেশি সমাদর পেতাম।
চঞ্চল আরও লেখেন, কয়েক বছর আগ পর্যন্তও দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবেই এলাকায় সবার কাছে পরিচিত হতাম। বাবাকে একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ছোটবেলা থেকে তোমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে এসেছি, এখন যখন তোমাকে কেউ চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বলে চেনেন, তোমার কেমন লাগে? বাবা কোনো উত্তর না দিয়ে আমার দিকে শুধু ভেজা চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলেন। তার সেই গর্বিত মুখটা দেখে, আমার চোখ দুটোও ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। সন্তানের সকল সফলতায় বাবা-মায়ের যে কী শান্তি! কি আনন্দ! তা আমি দেখেছি। কয়েকটা দিন হলো, বাবা হাসপাতালের বিছানায় অচেতন।
বাবার জন্য প্রার্থনা করে চঞ্চল লেখেন, চোখের জলে আমাদের বুক ভেসে যায়, আর প্রার্থনা করি, আমার বাবা সুস্থ হয়ে উঠুক। বাবা-মাকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে কোনো সন্তানই ভালো থাকতে পারেন না। আমিও ভালো নেই!
Advertisement
জানা গেছে, ২৮তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে চঞ্চলের চৌধুরী অভিনীত সিনেমা ‘হাওয়া’। তাই কলকাতার দর্শকরা এ ছবি দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন। চঞ্চলকে নিয়ে সেখানে তুমুল আলোচনা চলছে। তবে যাকে নিয়ে এতো চর্চা, যার সিনেমাকে কেন্দ্র করে এতো আলোচনা, তিনিই ছবির সংবাদ সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ কলকাতায় আয়োজিত ‘হাওয়া’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে দেখা যায়নি চঞ্চল চৌধুরীকে। জানা গেছে, বাবার গুরুতর অসুস্থতার কারণে চঞ্চল চৌধুরী সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি।
এমআই/এমএমএফ/এএসএম