আন্তর্জাতিক

কোন পথে মার্কিন অর্থনীতি?

২০২৩ সালে মন্দার দিকে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি। গত ৫০ বছরে যখনই দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বার্ষিকভিত্তিতে ৫ শতাংশের বেশি হয়েছে তখনই অর্থনৈতিক মন্দার দিকে হেঁটেছে। বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হবে না। যুক্তরাষ্ট্রে যখনই প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয় তখনই মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা যায়।

Advertisement

২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক ছিল না। প্রযুক্তিখাতেও পতন দেখা গেছে। যদিও শ্রমবাজার শক্তিশালী দেখা যায়। মার্কিন মন্দার বিষয়ে কথা বলেন জাতীয় অর্থনীতি গবেষণা ব্যুরোর বিশেষজ্ঞরা। এ বছর তারা মন্দার ব্যাপারে তেমন কোনো কথা বলেননি। কিন্তু আসন্ন বছরে তারা আর চুপ থাকবেন না। যেহেতু মার্কিন প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী তাই বেড়ে যাবে বেকারত্বের হার। ফলে দেশটির অর্থনীতি যে সংকুচিত হবে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের নিকটবর্তী মন্দার প্রধান কারণ হবে ফেডারেল রিজার্ভ। কারণ তারা ২০২৩ সালেও কঠোর মুদ্রানীতি অবলম্বন করবে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ফেড কর্মকর্তাদের মধ্যম পূর্বাভাস ছিল ২০২৩ সালে সুদের হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করা হবে, বর্তমানে যা ৩ শতাংশের চেয়ে বেশি। তারপরও নতুন বছরের শুরুতেও মূল্যস্ফীতি হতাশাজনক অবস্থানে থাকবে।

ধারণা করা হচ্ছে, সুদের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ২০২২ সালেই সুদের হার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। এতে এরই মধ্যে চাপে পড়েছে আর্থিক বাজার। আরও চাপে পড়তে যাচ্ছে ঋণগ্রস্ত কোম্পানিগুলো। তাছাড়া যেসব পরিবার একটু বেশি খরচ করে বেকায়দায় পড়বে তারাও।

Advertisement

তবে মার্কিন অর্থনীতির সব পরিসংখ্যানই নেতিবাচক নয়। আসন্ন মন্দা যে খুব ছোট হবে তা ভাবার অনেক কারণ আছে। যে পরিমাণ কর্মী রয়েছে তার তুলনায় বছরজুড়েই বেশি তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থান। এর মানে হলো অর্থনীতি সংকুচিত হলে নতুন নিয়োগ পিছিয়ে দিতে পারে কোম্পানিগুলো। কিন্তু তারা বড় পরিসরে চাকরিচ্যুত থেকে বিরত থাকবে। বলা হয়েছে ২০২২ সালের তুলনায় বেকারত্বের হার বাড়বে, তবে তা অস্বাভাবিকভাবে নয়।

আরও আশার কথা হলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অনেক বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে, যা মন্দা মোকাবিলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বা নেতিবাচক প্রভাবকে থামিয়ে রাখতে পারে।

২০২৩ সালের মধ্যে আমেরিকান অর্থনীতির চিত্র উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হবে। ধারণা করা হচ্ছে, যখন মন্দা শুরু হবে তখন ধীরে ধীরে মূল্যস্ফীতির হার কমতে শুরু করবে। এতে আগামী বছরের মাঝামাঝি ফেড সুদের হার বাড়ানো বন্ধ করে দেবে, শিথিল হবে তাদের আর্থিক নীতি। তবে আগামী বছরের শেষ দিকে যখন মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করবে তখন সুদের হারও কমানো হতে পারে।

যদিও আমেরিকার স্বল্পমেয়াদি পরিবর্তিত প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালের শিরোনামে প্রাধান্য পাবে। তাছাড়া এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবকাঠামো, জলবায়ু এবং প্রযুক্তির জন্য বিনিয়োগ প্যাকেজ পাসের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি বড় আইনি বিজয় অর্জন করেছেন। এগুলো বাস্তবায়নের কঠোর পরিশ্রম ২০২৩ সালে শুরু হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আগামী বছরের পর মার্কিন অর্থনীতি পুরোদমে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে।

Advertisement

এমএসএম/এসএইচএস/এমএস